ভুক্তভোগী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ আকার ধারণ করেছে উত্তর হাটহাজারীর ৩২টি গন্তব্যের । বাস সার্ভিসের স্বল্পতা ও ফটিকছড়িগামী সিএনজি টেক্সিগুলো ডিরেক্ট যাত্রী নিতে গিয়ে এইসব গন্তব্যের যাত্রী না নেওয়াকে এই দুর্ভোগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, ফটিকছড়িগামী সিএনজি টেক্সিগুলো হাটহাজারী বাস স্টেশন এলাকায় ডিরেক্ট যাত্রী নেওয়ার নামে সারাক্ষণ হাটহাজারী–নাজিরহাট মহাসড়কের উপর ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে। এতে করে যানজট নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বারবার অভিযানের পরও এর সুফল মিলছে না।
ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগে জানা যায়, চট্টগ্রাম তথা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো হাটহাজারী বাস স্টেশন হয়ে রাউজান, পার্বত্য জেলা রাঙামাটি এবং নাজিরহাট, ফটিকছড়ি ও পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু হাটহাজারী বাস স্টেশন এলাকায় ফটিকছড়িগামী সিএনজি টেক্সিগুলো ডিরেক্ট যাত্রী নেওয়ার নামে সারাক্ষণ ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে। এতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যদি উত্তর হাটহাজারীর যাত্রীদের নিয়ে সিএনজিগুলো ছেড়ে যেত তাহলে মহাসড়কের উপর এত সিএনজি দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হত না। এতে করে বাস স্টেশন এলাকায় যানজট তৈরি হত না। জানা যায়, জনগুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ককে যানজট মুক্ত
রাখতে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বারবার অভিযান করার পরও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযানের পর কয়েক ঘণ্টা স্বাভাবিক থাকলেও ‘পরে যথা পূর্বং তথা পরং অবস্থা’! বাস স্টেশন এলাকায় যানজটের কারণে লোকজন যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্রে অথবা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে বিলম্ব হয়ে থাকে। ফটিকছড়িগামী সিএনজি টেক্সিতে হাটহাজারীর উত্তর এলাকার মেডিকেল রাস্তার মাথা, মাটিয়া মসজিদ, মীরেরখীল বড়ুয়া পাড়া রাস্তার মাথা, মীরেরহাট, হেফজখানা, আলমপুর স্কুলের রাস্তার মাথা, মুন্সির মসজিদ, হালদা প্যারালাল খালের পাড়, বোর্ড স্কুল, ইজতেমার মাঠ, চারিয়া নয়াহাট, বুড়ি পুকুর পাড়, কলঘর, মুছার দোকান, মুহুরীহাট, বটতল, কালীদাস চৌধুরীহাট প্রকাশ মইগ্যারহাট, ভেলোয়ারপাড়া রাস্তার মাথা, গনি মার্কেট গেইট, সরকারহাট বাজার, কুমারীকুল রাস্তার মাথা, এনায়েতপুর কালীবাড়ি, বালুরটাল, নিশি মহাজনের ঘাটা, চেয়ারম্যান ঘাট, মনিয়া পুকুরপাড়, খন্ডলেরঘাটা, হোনাইরকুল, শাহজাহান শাহ’র মাজার গেইট, কাটিরহাট, ধলইর পোল, সৈয়দ কোম্পানি রাস্তার মাথা, মুহুরীঘাটা, নুরআলী মিয়ারহাট বাজার প্রভৃতি গন্তব্যের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ফটিকছড়ি ও রাউজানগামী সিএনজি টেক্সির কারণে যানজটের বিষয়ে জেলা ও উপজেলা মাসিক আইন–শৃক্সখলা বিষয়ক কমিটির সভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনার বিষয়ে মতামত নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বিগত প্রায় দুই মাস আগে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া এই চার উপজেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন নিয়ে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে মতবিনিময় সভা করেন। এই সভায় ও ফটিকছড়ি ও রাউজানগামী সিএনজি টেক্সিগুলো শৃক্সখলা না মেনে এলোপাতাড়ি দাঁড়ানো, ডিরেক্ট যাত্রী নেওয়ার জন্য মহাসড়কের উপর দাঁড়ানোকে যানজটের কারণ হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে। আর এই যানজট নিরসনের জন্য জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, ট্রাপিক বিভাগ, সচেতন নাগরিক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন বলে আলোচনা উঠে এসেছিল। কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে যানজট নিরসনের মত জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমাধান হচ্ছে না। তাছাড়া হাটহাজারীর উত্তর এলাকার গন্তব্যের যাত্রীদের দুর্ভোগও চরম আকার ধারণ করেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের আশু প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মহল।