বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে । গতকাল তারা ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী একটি শহরে রুশ সেনাদের কার্যালয় দখল করেছে। এর পর তারা মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়ার হুমকি দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ওয়াগনারপ্রধানকে ‘বিশ^াস ঘাতক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তারা ‘পেছন থেকে ছুরি মেরেছে’। অন্যদিকে ইউক্রেন এ ঘটনাকে রাশিয়ার ভেতর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে বর্ণনা করছেন। খবর বিবিসি।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জোকস ইউরি স্যাক বলেছেন, আমরা রাশিয়ার ভেতরে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি দেখছি। বিবিসি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কথোপকথনের সময় স্যাক বলেন, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের সময়ই বিশ^ ভেবেছিল রাশিয়ার রয়েছে ‘বিশে^র দ্বিতীয় শক্তিশালী সেনাবাহিনী। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাদের শক্তি কেমন। তিনি মনে করেন, রাশিয়ার ভেতরে অত্যন্ত স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটছে, যা নিয়ে ক্রেমলিন মিথ্যাচার করছে। এর পরই তিনি বলেন, খুব শিগগির এ পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধের দিকে যাবে। তবে বিবিসির রুশ সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ জানিয়েছেন, রাশিয়ায় গৃহযুদ্ধের কোনো ছায়া দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, রাজধানী মস্কোর রাস্তাঘাট শান্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষও প্রতিদিনের মতোই যাতায়াত করছে। কোনো নিরাপত্তার নির্দেশনা নেই।
ওয়াগার গ্রুপ ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী শহর রোস্তোভ-অন-ডন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সেখানেও তেমন কোনো উত্তেজনা দেখা যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যম এএফপির ছবিতে কয়েকজনকে আটক করার চিত্র দেখা গেছে।
চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে বেশ কয়েকবারই প্রিগোঝিন মস্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। সর্বশেষ ইউক্রেনের বাখমুত লড়াইয়ের সময় প্রিগোঝিন হুমকি দিয়েছিলেন, যদি তাদের দাবি না মানা হয় তা হলে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবেন। তবে পরে মাখমুতের নিয়ন্ত্রণ রুশ বাহিনীর কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রিগোঝিন। কিন্তু মস্কোর সঙ্গে তিক্ততা শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন তিনি।
এদিকে গতকাল সংবাদমাধ্যমগুলোতে নানামুখী খবর প্রচার হতে থাকে। বিবিসির খবরে বলা হয়, প্রিগোঝিন ও রাশিয়ার সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকের খবরও এসেছে। টেলিগ্রামে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রুশ সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রিগোঝিন। একই সঙ্গে মস্কোর দিকে ওয়াগনার বাহিনীর অগ্রসরের খবরও পাওয়া গেছে। তবে শক্তিশালী রুশ বাহিনীর সামনে ওয়াগনার কতটা নিজেদের ধরে রাখতে পারে সেটিই দেখার বিষয়।