প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাগেরহাটের রাপমালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন করবেন । শনিবার বিকাল চারটায় গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হবে বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এনটিপিসির সঙ্গে সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি। এ লক্ষ্যে অর্থায়নের চুক্তিও হয়েছে। এরই মধ্যে জমি অধিগ্রহণ শেষে উন্নয়ন কাজও চলছে। তবে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কাজ এখনও শুরু হয়নি।
গত ১২ জুলাই ঢাকায় ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থায়নে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি হয়েছে ঢাকায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী এই কেন্দ্র স্থাপন শেষ হবে ২০১৯ সালে। রামপাল কেন্দ্রের ৭০ শতাংশ অর্থ নেয়া হবে ঋণ হিসেবে। এই ঋণ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। বাকি টাকা পিডিবি ও এনটিপিসি যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে।
পরিবেশবাদী ও বামপন্থি বেশ কিছু সংগঠন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকেই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাদের দাবি, এই কেন্দ্র নির্মাণ হলে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বনের গাছের পাশাপাশি নদীতেও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তার দাবি, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশবিরোধী। ভারতের স্বার্থরক্ষায় সরকার এই কেন্দ্রটি করছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, এ থেকে বাংলাদেশ আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারবে না। এই কেন্দ্রটি বাতিলের দাবিতে খালেদা জিয়া নিজ জোটের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দেশবাসীকেও সোচ্চার হতে আহ্বান জানিয়েছেন। আর বি্এনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, রামপাল বাতিলের দাবিতে বামপন্থি সংগঠনগুলোর আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে। আর সরকারের মনোভাব দেখে এ বিষয়ে আন্দোলনে নামবে বিএনপি।
অবশ্য সরকার বলে আসছে, রামপাল নিয়ে বিরোধিতাকারীদের দাবির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। পরিবেশ দূষণ রোধে এই কেন্দ্রে সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সারা পৃথিবীতেই একটি অনন্য স্থাপনা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন জানান, সংবাদ সম্মেলনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উঠা নানা সমালোচনা এবং আশঙ্কার জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে উঠা নানা প্রশ্নের বিজ্ঞানসম্মত জবাবও দেবেন তিনি।