গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৫৯ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দেশে । এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ২৬ অক্টোবর ১৯৬ জন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। এরপর থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড়শর নিচেই ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩০৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ওই ১৫৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। এই সময়ে মৃত্যু হয়নি কারও। তাতে দিনে শনাক্তের হার হয়েছে ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের দিন যা ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখ ৩৯ হাজার ১৩০ জন হয়েছে। মৃতের মোট সংখ্যা রয়েছে অপরিবর্তিতই রয়েছে, ২৯ হাজার ৪৪৬ জন। সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ দেশে কোভিডে একজনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। এরপর গত ৬২ দিন কোভিডে আর কারও মৃত্যু হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২২ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে ৩৪৫ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে, যা তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৩৩ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
এ সপ্তাহ থেকে ফাইজারের নতুন টিকায় বুস্টার ডোজ : দুই মাস পর আবার কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করছে সরকার। ফাইজারের নতুন ভ্যারিয়ান্টি কনটেইনিং ভ্যাকসিনে (ভিসিভি) তৃতীয় ও চতুর্থ বুস্টার ডোজ প্রয়োগ শুরু হবে এই সপ্তাহে। কোভ্যাঙের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে ফাইজারের এই টিকার ৩০ লাখ ডোজ পেয়েছে সরকার।
গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এই টিকাটি নতুন উদ্ভাবিত টিকা এবং বিভিন্ন দেশে দেওয়া হচ্ছে। বুস্টার ডোজ হিসাবে আমরা এই টিকাটি দেব। আমরা প্রায় ৩০ লাখ ডোজ টিকা ইতিমধ্যে পেয়েছি। তৃতীয় এবং চতুর্থ ডোজ আমরা এই টিকার মাধ্যমে দিব। তিনি বলেন, এই সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যাবে। টিকা ট্রায়াল সম্পন্ন করেছি। ইমেডিয়েটলি দেওয়া হবে।
বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারা তৃতীয় ডোজ পাবে। আর ক্রনিক রোগী যারা তারা, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই, গর্ভবতী মায়েদের এবং সম্মুখ সারির যোদ্ধা যারা চতুর্থ ডোজ পায়নি, তাদেরকে টিকা দেওয়া হবে।
ডব্লিউএইচও এই টিকার অনুমোদন দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে আমাদের টিকাদানের জাতীয় কারিগরি কমিটি, তারও অনুমোদন ও মতামত রয়েছে। আমাদের ওষুধ প্রশাসনেরও অনুমোদন রয়েছে। আমরা সারা দেশে সিটি কর্পোরেশন, জেলা–উপজেলায় যে টিকাকেন্দ্রগুলো আছে, সেখানে আমরা এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি।
কোভিড মারাত্মক আকার ধারণের আশঙ্কা নেই : করোনার সংক্রমণ ইদানীং কিছুটা বাড়লেও মহামারী মারাত্মক আকার ধারণ করার কোনো আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি জেনেভা থেকে এসেছি। সেখানে দেখলাম একটি লোকও মাস্ক পরেনি। সেখানে যে রোগী হচ্ছে না দু–একটা করে তা নয়। আমাদের এখানেও দু–একটি করে রোগী পাচ্ছি। ইদানীং কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে তেমন কোনো রোগী নেই। যেহেতু টিকা সকলে নিয়েছেন, সেজন্য কোনো মারাত্মক আকার ধারণ করছে না করোনা। এরপরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।