প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে সুযোগ তৈরি করলেও এর মাধ্যমে নতুন নতুন হুমকি বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন । ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে এখন বেশি কঠিন। কারণ, অশুভ শক্তি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের জীবনের শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। প্রযুক্তির সাম্প্রতিক বিকাশ ও অগ্রগতির সাথে সাথে অশুভ শক্তির নতুন হুমকি বাড়ছে। প্রযুক্তি মানুষকে আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে সুযোগ দিচ্ছে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমরা এটাও দেখছি যে, অপশক্তিগুলোও প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং মানুষের জীবনের শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। কাজেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষীদের জটিল বহুমাত্রিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
বাসস জানিয়েছে, যে কোনো সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করা দরকার সবই (সরকার) করবে। আমরা যে কোনো সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমরা অস্ত্র প্রতিযোগিতা চাই না। কারণ নারী, শিশু ও প্রতিটি পরিবার এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে। তাই তাদের এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য।
উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনকে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার সরকার বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বদা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করেছে। আমরা মিশন এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া এবং ভূখণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করছি। সরকার শান্তিরক্ষীদের যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টে আধুনিক মাইন প্রতিরোধী, অতর্কিত হামলা সুরক্ষিত যানবাহন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করা একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা আমরা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আত্মদানকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে ‘বাংলাদেশ ইন গ্লোবাল পিস’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত পাঁচজনের পরিবারের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি একটি ইন্টারন্যাশনাল পিসকিপার জার্নাল উন্মোচন করেন।