প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ‘ছিনিমিনি’ খেলতে না পারে সেজন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন বাসস জানিয়েছে।গতকাল শুক্রবার ঢাকার আশকোনা এলাকায় হাজী ক্যাম্পে ‘হজ কর্মসূচি–২০২৩ ‘ এর উদ্বোধন করে এ কথা বলেন সরকার প্রধান। প্রত্যেকে সুস্থভাবে হজ পালন করে যাতে দেশে ফিরতে পারেন, সেই প্রত্যাশা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাছে সব থেকে বড় চাওয়া হল জনগণের ভাগ্য নিয়ে যেন ছিনিমিনি না খেলে, এজন্য দোয়া চাই আপনাদের কাছে। খবর বিডিনিউজের।
এ সময় উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের হাত থেকে দেশ–জনগণ যাতে রেহাই পায় সেজন্যও হজযাত্রীদের দোয়া করার আহ্বান জানান সরকার প্রধান। ‘বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ঘটে, কারণ এখানে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা এবং পরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়।’
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, জঙ্গি–সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নাই। কেউ যদি মনে করেন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবেন সেটি ধর্মে নেই। কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এটি সর্বদা মানুষের কল্যাণের ধর্ম যা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। সতর্ককতার পাশাশপাশি জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে আলেম–ওলামা এবং হজযাত্রীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের (হজযাত্রীদের) এবং আলেম–ওলামাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের শিশুরা এটি থেকে দূরে থাকতে পারে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রস্তুত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অল্প কিছু মানুষই ইসলামের নিন্দার কারণ হয়ে উঠছে। জঙ্গি–সন্ত্রাসের মত জঘন্য কাজগুলো থেকে সেইসব মানুষদের থামাতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। সবাইকে শিশুদের বেড়ে ওঠার পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকারও তাগিদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
হজ ব্যবস্থাপনা ‘আধুনিকায়নে’ সরকারের উদ্যোগ : প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন–২০২১ প্রণয়ন করার মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও ‘সহজ’ করা হয়েছে। আগে সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে সেসব কমিয়ে আনতে সরকারের অন্যান্য উদ্যোগের কথা তিনি বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ই–হজ ব্যবস্থাপনা চালু করা করেছে। যার মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম যেমন প্রাক–নিবন্ধন, নিবন্ধন, ফেরত, মক্কা রোড সার্ভিস, ই–হেলথ, ই–ভিসা, ফ্লাইট, হেল্প ডেস্ক, কল সেন্টার, এজেন্সি প্রোফাইল ম্যানেজমেন্ট এসব ই–হজ ব্যবস্থাপনার অধীনে করা হচ্ছে।
সরকারপ্রধান জানান, কল সেন্টারের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি হজযাত্রীকে এসএমএসের মাধ্যমে হজ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে এখন। এছাড়া হজযাত্রীরা কল করেও মাধ্যমেও হজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারছেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার ২৭ জুন হজ হতে পারে। আর হজ ফ্লাইট শুরু হবে আজ শনিবার। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে হজের প্রথম ফ্লাইটটি ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজে যাচ্ছেন।