কোনো কারণে যদি শারীরিক উষ্ণতা কমে যায়, ভালোবাসা এবং সমঝোতার মাধ্যমে তা ফিরিয়ে আনা যায়।দাম্পত্য জীবনে কাম অত্যাবশ্যকীয় না হলেও আবশ্যক।

সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বাইরে থেকে যেমনই দেখাক, সম্পর্কের ভিত্তিতে শারীরিক সম্পর্কের একটা বাঁধন সব সময় থাকে। এ বাঁধন কোনো কারণে আলগা হয়ে গেলে তার প্রভাব সম্পর্কের স্থায়িত্বের উপর পরে। প্রতিকারের জন্য তাই দরকার পারস্পারিক সমঝোতা।

রোগ নির্ণয় আবশ্যক: যুক্তরাষ্ট্রের সাইকোথেরাপিস্ট এবং লেখক মারি জো রাপিনি বলেন, “লোকে ভাবে যে, শারীরিক সম্পর্কে ভাটা আসার বিষয়টা খুবই অস্বাভাবিক এবং সে একাই এই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আসলে সত্য হচ্ছে এটা একটা সার্বজনীন সমস্যা। অনেকেই জীবনের একটা পর্যায় এই সমস্যার মধ্য দিয়ে যান।”

শারীর সম্পর্ক স্থাপনে ব্যাঘাত ঘটার সাধারণ কারণও থাকতে পারে। এর মধ্যে কাজের চাপ, শারীরিক অসুস্থতা, উচ্চ রক্ত চাপ, ডায়বেটিস, হরমোনের সমস্যা থাকতে পারে। এই সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।

রাপিনির মতে, “সবসময় সমস্যা এত গুরুতরও হয় না। অনেক সময়ই নির্দিষ্ট রুটিনে নিজেদের আটকে ফেলার ফলে যুগলের মতো আচরণ না করে সাধারণ বন্ধুর মতো আচরণ করেন। ফলে এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্কে ভাটা এসেই যায়।”

সমস্যা যাই হোক না কেনো দুজনের স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা আবশ্যক। হয়ত ‘সেক্স’ করার মতো মানসিক বা শারীরিক অবস্থায় কেউ নেই, তবে সঙ্গীর কাছে সমস্যাটার বিষয়ে অকপট হতে হবে। সমস্যা নির্ণয় করতে হবে এবং তার প্রতিকারও বের করতে হবে, পরামর্শ দিলেন রাপিনি।

সময় এবং সততার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা: কাজের এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে সম্পর্কের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনা যায়। কাজের মতো রুটিন করে তো আর ভালোবাসা-বাসি করা সম্ভব নয়। তবে সপ্তাহের একটা রাতকে “ভালোবাসার রাত” ঘোষণা করে দেওয়া যায় জানান সান্টা মনিকায় অবস্থিত হল সেন্টারের পরামর্শদাতা ডা. প্রুডেন্স হল।

তার মতে, “ভালোবাসাটাও একটা অনুশীলনের বিষয়। আমরা যেমন ব্যায়াম করতে বা মেডিটেশন করতে ভালোবাসি না, কিন্তু জানি এটা আমাদের জন্য কত উপকারী। তেমনি সময় ধরে ভালোবাসা শুনতে খারাপ শোনালেও এটা আসলে একটা সফল সম্পর্কে জন্য খুবই দরকার।”

প্রতিদিন ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি: সঙ্গীকে যত স্পর্শ করা যায় ভালোবাসা ততই বাড়ে। তাই কিছুটা সময় গা ঘেঁষে থাকলেও ভালোবাসা তৈরি হয়। ভালোবাসা জাগিয়ে তোলার জন্য তাই স্পর্শের কোনো তুলনা নাই জানান ড. রাপিনি।

তার মতে, “স্পর্শের মতো ছোট বিষয়গুলোকেও উপেক্ষা করা ঠিক না। এই ছোট ছোট বিষয়গুলোই সম্পর্কে উষ্ণ রাখে। তাই সাধারণ সিনেমা দেখার মুহূর্তে হাত ধরে রাখা বা বিদায় জানানোর সময় চুমু খাওয়ার মতো সামান্য বিষয়গুলো জীবন থেকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।”

বিশেষ উপলক্ষ্যে একে অপরকে উপহার দেওয়া, একজনের অনুপস্থিতেও তার সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে রাখার মতো কাজগুলোকেও অবহেলা করা যাবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলেন সম্পর্কে ‘ভাটা’ তখনই আসে যখন দম্পতিদের মধ্যে বাঁধন তৈরি করার ছোট ছোট সুখগুলো হারিয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া: যখন নিজেদের চেষ্টাতেও সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে না তখন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। হতে পারে সে কোনো মনরোগ বিশেষজ্ঞ, অথবা চিকিৎসক।

অনেক সময়ই আমরা নিজেরা নিজেরা সমস্যার সমাধান করে উঠতে পারি না। তবে বিশেষজ্ঞরা তাদের জ্ঞান এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা দিয়ে আরও ভালোভাবে সাহায্য করতে পারেন।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031