কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত জমিতে আবাসিক হল নির্মাণ এবং কেরানীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনা জায়গায় নতুন হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান।
উপাচার্য বুধবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন ।
অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। এখানে শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা না থাকার পরও তারা অনেক কষ্টের মধ্যে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংকট সমাধানের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাদের এই যৌক্তিক আন্দোলকে আমি নৈতিকভাবে সমর্থন করছি।”
তবে আবাসন সংকটের সমাধান এক দিনে সম্ভব নয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, “আমরা সরকারের কাছে কারাগারের জমির জন্য আবেদন করেছি এবং বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছি। খুব দ্রুতই একটা সমাধান হবে। তাই শিক্ষাব্যবস্থা ব্যহত হয় এমন আন্দোলন থেকে তোমাদের ফিরে আসা উচিত।” শিক্ষার্থীরা যদি প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে চায় তাহলে একটি প্রতিনিধিদলকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহায়তা করবে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৌনে তিন শত কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলে তাকে জানিয়েছেন মন্ত্রী। শিগগিরই সেটি একনেকের সভায় উঠবে। এর মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে মনে করেন উপাচার্য।
এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে ধর্মঘট শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস থেকে একটি মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি কয়েক ধাপে পুলিশের বাধা অতিক্রম করলেও পল্টন মোড় থেকে সামনে যেতে পারেনি। পুলিশের বাধার মুখে পল্টনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বেলা ২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
কর্মসূচি ঘোষণা: পল্টন মোড়ে বিক্ষোভের পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার বিকেলে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংহতি সমাবেশ ও সন্ধ্যায় শাহবাগে মশাল মিছিল করবেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট সমাধানের আন্দোলন উপলখ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। শিক্ষার্থীদের পক্ষে বাংলা বিভাগের রাশেদুল ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।