আমরা কখনো শুনি নাই, দেখিও নাই যে, পবিত্র রমজানের মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে কেউ রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ করেতথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন। তারা রমজানেও মানুষকে নিস্তার দিচ্ছে না।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মন্ত্রী বলেন, রমজানেও বিএনপি মানুষকে নিস্তার দিচ্ছে না এবং বিএনপির কর্মসূচি নিঃসন্দেহে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করছে। তিনি বলেন, তারা ইসলামের কথা বলে অথচ রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করে কর্মসূচি পালন করছে, যেটি অনভিপ্রেত, দুঃখজনক এবং তাদের সামপ্রতিক কর্মসূচিগুলো তাদের অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তাদের পেট্রোলবোমা তাণ্ডব দমনকারী আওয়ামী লীগ জানে কখন কী করতে হয়। খবর বাসসের।
মানুষ প্রতিবাদ করছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি : তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে সমগ্র দেশের মানুষ প্রথম আলোর ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি। বরং এটার বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ‘এই অপপ্রচারও একটি অপরাধ’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে দেশে প্রতিদিন পত্রিকা, টিভি, অনলাইনে রিপোর্ট হয়েছে এবং হচ্ছে। মামলা তো দূরে থাক, কাউকে এ নিয়ে প্রশ্নও করা হয়নি। তাই শামসুজ্জামানকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে লেখার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটিও একটি অপরাধ। এটার জন্য আবার কেউ মামলা করে কিনা সেটিও দেখার বিষয়।
তিনি বলেন, সারা দেশে এ নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। ফেডারেল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম, সংবাদপত্র পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছে।
অভিযুক্ত শামসুজ্জামানকে ভোররাতে গ্রেপ্তার নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাত ৪টায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দেশে কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন এবং বড় রাজনীতিবিদ তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা সবাই জেলে গেছি। বেশিরভাগকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কই তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি যারা ছিলেন তাদেরসহ সবাইকে রাতে গ্রেপ্তার করা যাবে, কিন্তু একজন সাংবাদিক যদি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করে, একজন শিশুকে এঙপ্লয়েট করে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব খাটো করে, তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না–এমন আইন তো নাই। মামলা দায়ের হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখানে দেখতে হবে, তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তো আসেনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করি এবং যখনই কোনো সাংবাদিক হয়রানির স্বীকার হয়, তখন সবার আগে হস্তক্ষেপ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, সবার উপরে আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে স্থান দেই এবং সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে যেন এমন কোনো কাজ না করি যাতে করে সাংবাদিকতার নীতি–নৈতিকতার পরিপন্থী, দেশবিরোধী কোনো কিছু হয়।
সাড়ে তিনশর বেশি পত্রিকার প্রকাশক–সম্পাদকদের সংগঠন বিএসপির নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ মনে করে, সাংবাদিকতা নীতিমালা মেনেই সংবাদপত্র প্রকাশ করতে হবে, ছাপাতে হবে। যারা এ ধরণের লেখনী লিখছেন, এটা অনভিপ্রেত, অযাচিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।