তারবিহা শব্দের বহুবচন তারাবি।রোজার ইবাদতের মধ্যে অন্যতম তারাবি। তারবিহা মানে বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজান মাসে এশার নামাজের পর সুন্নতে মুয়াক্কাদার ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে। সূত্র : আল কামুসুল ফিকহ

রমজান ছাড়া আর কখনো তারাবির নামাজ পড়া যায় না। রাসুলুল্লাহ (স) নিজে তারাবির নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবাদের উৎসাহিত করেছেন। তারাবির নামাজ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। বাঙালি মুসলমানের এ ধর্মীয় ইবাদতে যোগ দেয় কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ। অংশ নেন ধনী-গরিব সবাই। উৎসবমুখর আয়োজনে উদযাপিত হয় তারাবি। আদায় করেন ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে। অনেকটা কবি জসীমউদ্দীনের কবিতার মতো। কবি জসীমউদ্দীন বলেছেন, তারাবি নামাজ পড়িতে যাইব মোল্লাবাড়িতে আজ/মেনাজদ্দীন, কলিমদ্দীন, আয় তোরা করি সাজ/চালের বাতায় গোঁজা ছিল সেই পুরাতন জুতা জোড়া/ধুলাবালু আর রোদ লেগে তাহা হইয়াছে পাঁচ মোড়া/তাহারি মধ্যে অবাধ্য এই চরণ দুখানি ঠেলে/চল দেখি ভাই খলিলদ্দীন, লুণ্ঠন-বাতি জ্বেলে/ ঢৈলারে ডাক, লস্কর কোথা, কিনুরে খবর দাও/ মোল্লাবাড়িতে একত্র হব মিলি আজ সারা গাঁও।

তারাবির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রার (র) সূত্রে মহানবী (স) বলেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারি, শরিফ : ৩০)

হজরত আয়েশা (র) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স) একবার রমজান মাসে রাত্রিবেলায় মসজিদে নববীতে নামাজ (তারাবি) আদায় করলেন। উপস্থিত লোকজনও তার সঙ্গে নামাজ আদায় করলেন। একইভাবে তারা দ্বিতীয় দিনেও নামাজ আদায় করলেন এবং লোকসংখ্যা অনেক বেশি হলো। অতঃপর তৃতীয় এবং চতুর্থ দিনেও মানুষ একত্রিত হলো। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (স) হুজরা থেকে বেরিয়ে তাদের কাছে এলেন না। অতঃপর সকাল হলে তিনি এলেন এবং বললেন, তোমাদের অপেক্ষা করার বিষয়টি আমি লক্ষ্য করেছি। কিন্তু শুধু এ ভয়ে আমি তোমাদের নিকট আসা থেকে বিরত থেকেছি যে, আমার আশঙ্কা হচ্ছিল, না জানি তোমাদের ওপর তারাবি ফরজ করে দেওয়া হয়। বুখারি শরিফ

তারাবি ২০ রাকাত সুন্নাত। এটা রাসুল (স) সাহাবি, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন এবং মুজতাহিদ ইমামগণের আমল দ্বারা প্রমাণিত। হজরত ইবনে আব্বাস (র) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) রমজান মাসে ২০ রাকাত এবং বেতের নামাজ পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা) সমস্ত সাহাবির আমলও ২০ রাকাত ছিল। রাসুল (স)-এর নাতি হজরত আলী ইবনে হাসান (র) থেকে বর্ণিত, হযরত ওমর (র)-এর নির্দেশে লোকদের নিয়ে উবাই বিন কাব (র) ২০ রাকাত তারাবি পড়েছেন। (আবু দাউদ) এভাবে খলিফা ওমর, ওসমান, আলীসহ (র) সব সাহাবির ঐকমত্যে ২০ রাকাত তারাবি পড়া হয়েছে।

তারাবির নামাজের নিয়ম হলো- দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। দুই দুই রাকাত করে প্রতি ৪ রাকাত পর পর কিছু সময় বিশ্রাম। বিশ্রামের এ সময়টিতে তাসবিহ-তাহলিল ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা।

যে কোনো সুরা দিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করা।আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031