অসহায় মা ও বাবা অভাবের তাড়নায় ৪৭ দিনের এক শিশুকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন। বিক্রির পরই মায়ার টানে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় ব্যাকুল হয়ে পড়েন তারা। দ্বারস্থ হন অনেকের কাছে।
এলাকাবাসীরা মানবিক দিক বিবেচনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানায়। পরে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ ঢাকা জেলার দোহার সদর থানা এলাকার নারিশা গ্রাম থেকে আজ বৃহস্পতিবার শিশুকে উদ্ধার করে।
বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ, দক্ষিণ জোন) মাহবুব উজ-জামান।
পুলিশ জানায়, টঙ্গী পূর্ব আরিচপুর আইনুদ্দিনের বাড়িতে লিমা হনুফা (৩৬), স্বামী মাসুম ও ৩ শিশু সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন। নিম্ন আয়ের পরিবার হওয়ায় সংসারের খরচ জোগাতে গিয়ে বেশ ঋণ হয়ে যায় তাদের। পরে টাকা শোধ করার চাপ এলে অভাবের তাড়নায় গত সোমবার শিশুকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেয়।
খবর পেয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শিশুকে আজ উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। পরে সন্তানদের লালন-পালন করা সুবিধার্থে পুলিশের উদ্যোগে শিশুর বাবা মাসুমকে টঙ্গীর এ টি হক গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।
শিশুর মা লিমা হনুফা বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় ও দেনা পরিশোধ করার জন্য পরিবারে সকলের চাপের মুখে পরে সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে আমার কোল থেকে শিশু হারিয়ে যাওয়ার পর হতেই বুকটা ফেটে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল মরেই যাচ্ছি। পুলিশের সহযোগিতায় আমার বাচ্চা ফিরে পেয়ে বুকটা ভরে গেছে। সেই সাথে আমার স্বামীর চাকরির ব্যবস্থাটা হওয়ায় এখন বুকের হাহাকার অনেকটা কমে গেল।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ, দক্ষিণ জোন) মাহবুব উজ-জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেই। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটি বিক্রি হওয়া ৩০ হাজার টাকাও পরিশোধ করা হয়। শিশুর বাবাকেও একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’