আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল ডা. মো. মুরাদ হাসানকে ঢালিউডের এক অভিনেত্রীকে কুপ্রস্তাব ও বিভিন্ন সময় শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে জামালপুর জেলা । এ ছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকেও তাকে পদত্যাগের কথা বলা হলে তিনি পদত্যাগ করেন। তবে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে দেওয়া অব্যাহতি প্রত্যাহার করে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য দেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষমা পাওয়ার বিষয় তুলে ধরে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘মেয়র জাহাঙ্গীর গুরুতর কথা বলেছেন, তাই তিনি চিঠিটা দ্রুত নিয়েছেন। আমিও আবেদন করেছিলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু এখনও চিঠি আনতে যাইনি।’
গত ২২ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের প্যাডে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘সাধারণ ক্ষমা’ চেয়ে আবেদন করেন ডা. মুরাদ।
সাধারণ ক্ষমার আবেদনে মুরাদ বলেন, ‘আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালে ৭ ডিসেম্বর ওই পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি প্রদান করে।’
তিনি লেখেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করিতেছি যে ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সম্মানহানি হয়। অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী মুরাদের টেলিফোন কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি তোলে।
এরপর জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এই সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৭ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করলে ওইদিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
একইদিনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।