মাহফুজা আক্তার হ্যাপী ক্রিকেটার কাজী শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্য তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করেনি বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে ।
তার পক্ষে একজন সাংবাদিকের দায়ের করা নির্যাতন মামলায় বুধবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ অস্বীকার করে এই সাক্ষ্য দেয় হ্যাপী।
সাক্ষ্যে হ্যাপী বলেন, ‘আমি ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বাসায় কাজ করতাম। সাত মাস কাজ করেছিলাম। কাজ করতে ভালো লাগত না। এ জন্য শাহাদাতের স্ত্রী বকাঝকা করত। দুর্ঘটনায় আমার পা ভেঙে যায়। এ জন্য চিকিৎসা নেই। আসামিরা আমাকে কোনো রকম খুন্তির ছ্যাঁকা দেননি। মামলার করার সময় আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে নাই। আমি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডাক্তারের কাছে কিছু বলেছি কি না, আমার খেয়াল নেই।’
ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানজিনা ইসমাইল এ সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আসামিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ায় হ্যাপীকে বৈরী ঘোষণা করে জেরা করেন রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি আলী আসগর স্বপন।
মিরপুরের ২ নম্বর সেকশনের এইচ ব্লকের ৫ নম্বর রোডে শাহাদাতের বাড়িতে কাজ করত হ্যাপী। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পল্লবীর সাংবাদিক কলোনির ৩ নম্বর রোডের মাথায় হ্যাপীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন মিরাজ উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি। গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে শাহাদাত দম্পতির বিরুদ্ধে ওই দিনই রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর হ্যাপী ম্যাজিস্ট্রেট সিগ্ধা রানী চক্রবর্তীর কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দেয়। সেখানে শাহাদাতের স্ত্রী বকাঝকা ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া এবং খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছিল।
মামলায় গত ২৯ ডিসেম্বর মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুর রহমান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এর আগে ৪ অক্টোবর শাহাদাতের স্ত্রী নিত্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরদিন শাহাদাত আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তারও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর ১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ নিত্যের এবং ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট শাহাদাতের জামিন মঞ্জুর করলে তারা কারামুক্ত হন।