গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই কুমিল্লায় বিভিন্ন জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছে ধর্মঘট না থাকলেও গণসমাবেশ শুরু হওয়ার দুইদিন আগে । ইতোমধ্যে সমাবেশস্থল টাউন হল মাঠ কর্মী-সমর্থকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে। গতকাল রাত থেকে টাউন হল মাঠে দল বেধে কর্মী-সমর্থকরা টাউন হলে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে। ইতোমধ্যে চাঁদপুর থেকে বড় একটি মিছিল নিয়ে বৃহস্পতিবার নেতাকর্মীরা মাঠে এসেছে।

এর আগে, শুধু সমাবেশের দিন বিএনপি কর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসাসহ মোট ১০ শর্তে কুমিল্লা টাউন হল ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনের অনুমতি দেয় প্রশাসন। এই গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

আরও বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা পরিচালনা করবেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, স্থানীয় বিএনপির বিবাদমান দুটি গ্রুপের কর্মীদের অবস্থান জানান দিতেই আগে ভাগে তারা সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন। টাউন হল মাঠের দুই পাশে তারা অবস্থান নিয়েছেন। নিজেদের পক্ষের নেতাদের নামে স্লোগান দিচ্ছেন। কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর সমর্থকরা মাঠের পূর্ব পাশে অবস্থান নিয়েছেন এবং অন্য পক্ষ পশ্চিম পাশে অবস্থান নিয়েছে। মাঠের উত্তর-পশ্চিম দিকে সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। গত বুধবার সকাল থেকে ৭২ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থের এই মঞ্চ তৈরি শুরু হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার মঞ্চ পরিদর্শন করতে আসেন কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশের দলীয় প্রধান (টিম লিডার) বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া। তারা পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন। ৭০ ফুট দৈর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ করা হবে। মঞ্চে পাঁচ জেলার জ্যেষ্ঠ নেতা ও কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন। অন্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো কুমিল্লাতেও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য চেয়ার রাখা থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ শুক্রবারের মধ্যে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হবে। অন্তত ২ শতাধিক নেতাকর্মী মঞ্চে অবস্থান করতে পারবেন। এছাড়া অন্য জেলা থেকে আসা বিএনপির কর্মী-সমর্থকদেরও সমাবেশস্থলে দেখা গেছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সাবেক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। এই আন্দোলনের সফলতা খালেদা জিয়ার মুক্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে। এটাই আমাদের সমাবেশের লক্ষ্য।’

এদিকে, গণসমাবেশ ঘিরে কুমিল্লায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। পুরো নগরে মাইকিং করা হচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে লাগানো হয়েছে নগরের সড়কগুলো লাগোয়া বিভিন্ন স্থাপনায়। এই গণসমাবেশে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা, কুমিল্লা উত্তর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে পাঁচ লাখ লোক জড়ো করতে চায় বিএনপি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশের সমন্বয়কারী মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণসমাবেশের প্রচারণা চালাতে গেলে দলীয় কর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিচ্ছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। শর্ত দিয়ে আসলে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি হবে যুক্তিশীল।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা, কুমিল্লায় বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031