পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হুন্ডির মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছে । ২ হাজার মোবাইল সিম ব্যবহার করে এ অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে জানায় তারা।
গত সোমবার রাতে হুন্ডিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সিআইডির সদর দপ্তরে করা এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মীর মো. কামরুল হাসান শিশির (২৮), খোরশেদ আলম (৩৪), মো. ইব্রাহিম খলিল (৩৪), কাজী শাহ নেওয়াজ (৪৬), মো. আজিজুল হক তালুকদার (৪২) ও মো. নিজাম উদ্দিন (৩৫)।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, ‘হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেনের একাধিক চক্র রয়েছে। এমএফএসের ২ হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিট।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তাররা হুন্ডি ব্যবসা করে এবং অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার ও বিদেশে অবস্থানরত ওয়েজ আর্নারদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে অর্থ পাচার করে আসছে।’
সিআইডি প্রধান বলেন, ‘গ্রেপ্তার মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন কুমিল্লার লাকসামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ ‘‘জে এ এন্টারপ্রাইজের’’ ২ হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। ২ হাজার এজেন্ট সিমের বেশকিছু এজেন্ট সদস্য হুন্ডির মতো অবৈধ কাজে সরাসরি জড়িত।’
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্রিডমফ্লেক্সি২৪ডটকম এর মতো একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৌদি প্রবাসী হুন্ডি কারবারিরা বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন এমএফএস এজেন্টদের সহায়তায় টাকাগুলো সরাসরি পাঠাতেন। চক্রের সদস্যরা বিদেশে সম্পদ অর্জনসহ অনলাইনে জুয়া, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ভার্চুয়াল মূদ্রা কেনাবেচা, মাদক কেনাবেচা, স্বর্ণ চোরাচালান, ইয়াবা ব্যবসাসহ প্রচুর অবৈধ ব্যবসাও পরিচালনা করছেন।’
এমএফএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘সব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আওতায় অনেক ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ আছে। এই ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের মালিকদের উচিৎ অধীনস্ত যেসব এজেন্ট আছে তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা। যদি মনিটরিং না করে তাহলে তারা আইনের আওতায় আসবে।’