এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা মহামারী ও বন্যার কারণে কয়েক দফা পিছিয়ে সাত মাস পর আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের । নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার ৪ হাজার ৬৪৭টি প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। তাদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫০৬ জন, মানবিক বিভাগে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২ হাজার ৬৭৮টি প্রতিষ্ঠানে ৪৪৮টি কেন্দ্রে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ১ হাজার ৮৫৬টি প্রতিষ্ঠানে ৬৭৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন শিক্ষার্থী। দেশের বাইরের আটটি কেন্দ্রে ২২২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন।
জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য থাকবে ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল বা রচনামূলকের জন্য সময় থাকবে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এবার পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি ও গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয় এবং একটি ঐচ্ছিক বিষয়ে পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচিতে। এই সিলেবাস অনুযায়ী, বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র বিষয়গুলোতে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক আছে, সেগুলোতে ৪৫ নম্বরের (রচনামূলক ৩০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫ নম্বর) এবং ব্যবহারিক না থাকলে ৫৫ নম্বরের (রচনামূলক ৪০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫) পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৫ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এবার মোট ২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
advertisement 3
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে। দুপুরের পরীক্ষা হবে ২টা থেকে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে পারবেন না। উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও নিজে উপস্থিত হয়ে প্রশ্নপত্রের সর্টিং কার্যক্রম তদারকি করবেন। জেলা পর্যায়ে প্রশ্ন সর্টিংয়ের সময় উপস্থিত থাকবেন জেলা ট্রেজারি অফিসার বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া পরীক্ষার দিনগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্ব স্ব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। কোনো কর্মকর্তার পরিবর্তে তার প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে এমন শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় থাকবে। পরীক্ষার জন্য গত ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
advertisement 4
এদিকে পরীক্ষার সময় লোডশেডিং যেন না হয়, সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা আলাদা ব্যবস্থায় নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবদের ডেঙ্গু ও কোভিডের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কেন্দ্র ও আশপাশে ছিটাতে বলা হয়েছে মশার ওষুধ।
দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তোফাজ্জুর রহমান জানিয়েছেন, এখনো কোনো পরীক্ষার্থীর ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাননি তারা। কেউ যদি অসুস্থ থাকে, কেন্দ্র সচিবের কাছে সেই শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে আবেদন করতে হবে। কেউ আবেদন করলে ওই পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা রুমে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এমনকি তার বিছানা-মশারি লাগলে, সেটিও সে নিয়ে আসতে পারবে। এগুলোর ব্যবস্থা আছে আমাদেরও। এ ছাড়া দিনে পরীক্ষা হওয়ায় বিদ্যুতের তেমন সমস্যা হবে না।