রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনো আগ্রহ চীনের নেই বলে জানিয়েছেন । বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নানা বক্তব্যের মধ্যে গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে একথা জানান তিনি, যার দেশের নানা বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে। চীনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস নিয়ে শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরামের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে কথা বলেন লি জিমিং।
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ধরে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কেন, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন কখনও হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। তবে এদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক স্থিতিশীলতার এই ধারা অব্যাহত রাখাটা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন চীনের রাষ্ট্রদূত। খবর বিডিনিউজের।
এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর নাম থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। আওয়ামী লীগের জোট শরিক দুই বাম দলের নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া ছিলেন অনুষ্ঠানের মঞ্চে রাষ্ট্রদূতের দুই পাশে। লি জিমিং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাদের দেশের অবস্থানও প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, চীন কোনো যুদ্ধ চায় না। বর্তমান ক্রাইসিসের ক্ষেত্রেও দ্রুত সুষ্ঠু সমাধান চায়। তবে, এটাও মনে রাখতে হবে, কোনো কোনো রাষ্ট্র আবার এর সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। জ্বালানি সংক্রান্ত নানা পদক্ষেপ দেখে সেটা বোঝা যায়। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কেবল ইউক্রেন, রাশিয়া, ইউরোপের মানুষ না, এই পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্বের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়ছে সবার উপর। পশ্চিমারা ভাবে, মডার্নাইজেশন হল পশ্চিমা মডার্নাইজেশন। কিন্তু বিষয়টা তা না। এটা সার্বিক, বলেন বরাবরই পশ্চিমাদের সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা চীনের রাষ্ট্রদূত।
গত মাসে অনুষ্ঠিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেসে টানা তৃতীয় বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। কংগ্রেস প্রসঙ্গে লি জিমিং বলেন, নতুন এক যাত্রা শুরু করতে চীনের সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে নিয়ে মডার্ন সোশালিস্ট রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখবে এই কংগ্রেস। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জিমিং বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, আবার ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতির কথা চিন্তা করে অনেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না।