ছোটপর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি উপস্থাপক হিসেবেও হাজির হন মাঝেমধ্যে।অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস। দীপ্ত টিভিতে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত ধারাবাহিক ‘আগুন পাখি’। এ নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
‘আগুন পাখি’ নাটক নিয়ে দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
পরিচিতজনদের পাশাপাশি অনেক ভক্ত-দর্শক নাটকটি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করছেন। ‘আগুন পাখি’ মূলত সেই মেয়ের জীবনচরিত, যার প্রতিটি স্তরে রয়েছে বেড়ে ওঠার গল্প। নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার এক যাত্রা। মানবজীবনের এই গল্প দেশকালের ব্যবধান ঘুচিয়ে সবার কাছে চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠছে।
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের কালজয়ী উপন্যাসের চরিত্রে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
কালজয়ী সাহিত্যের যে কোনো চরিত্র পর্দায় তুলে ধরা চ্যালেঞ্জিং। গল্পের প্রেক্ষাপট, সেই সময়ের মানুষের জীবনযাপন, সামাজিক অবস্থান থেকে শুরু করে নানা বিষয় মাথায় রাখতে হয়। এর পর চরিত্রকে আত্মস্থ করে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সাবলীলভাবে অভিনয় করে যাওয়া মোটেও সহজ নয়। ‘আগুন পাখি’তে অভিনয় করা আরও চ্যালেঞ্জিং হয় এ কারণে যে, নাটকে দেশভাগের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ধর্মীয় ভেদাভেদ থেকে দেশভাগ, শিকড় উপড়ে এক ভূখণ্ড থেকে আরেক ভূখণ্ডে পা রাখার মতো ঘটনাগুলো এতে উঠে আসছে। হাসান আজিজুল হকের গল্পের যে বুনন- সেটা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সেদিকেও নির্মাতা পারভেজ আমিনকে লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে। পাশাপাশি শুটিংয়ের জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে যাওয়া, বিরূপ আবহাওয়ার মধ্য থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়া- এ সবকিছু মিলিয়ে ‘আগুন পাখি’ আমার ক্যারিয়ারে ব্যতিক্রমী একটি কাজ হয়ে উঠছে।
গেল দুই-আড়াই বছর পর্দায় আপনার উপস্থিতি কম ছিল। বিশেষ কোনো কারণ ছিল?
করোনা শুরুর আগ থেকেই মন খারাপ করে বাড়ি ফিরতাম। শুটিংয়ে যাচ্ছি, তার জন্য একটি প্রস্তুতিতে থাকতাম। আমি সব সময় অনুশীলন করে কাজ করি। গিয়ে দেখতাম যে কাজটা ভালোবাসা দিয়ে করতে চাই, সেই কাজ শুটিং ইউনিট থেকে অবহেলিত, অনেকটা দায়সারা। চরিত্রায়ন, পোশাক, অভিনয় এসবই কেমন যেন হুটহাট করে হচ্ছিল। ধর তক্তা, মার পেরেক ধরনের। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির জায়গাটা প্রায়ই শূন্যের কোঠায় নেমে আসছিল। তখন সিদ্ধান্ত নিই, এভাবে চলতে পারে না। তাই কাজ কমিয়ে দিই। আমি সব সময় একটা কথায় বলি, সংখ্যায় কম হলেও ভালো কাজই করতে চাই।
উপস্থাপনায় ফিরবেন কবে?
অন্যরকম এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে উপস্থাপনার প্রতি। ভ্রমণবিষয়ক আয়োজন হলে যে কোনো সময় কাজ করার জন্য আমি প্রস্তুত। অন্য ধরনের অনুষ্ঠান হলেও আপত্তি নেই।
‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দিয়ে আপনার পরিচিতি। তারপরও বড়পর্দায় নেই কেন?
সিনেমায় অভিনয় করতেই হবে- এটা ভাবি না। তবে মনের মতো চরিত্র পেলে অভিনয় করব। সাহিত্যনির্ভর কাজেই আমার দুর্বলতা বেশি। সাহিত্যের কালজয়ী চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলে তা ফেরাব না। পর্দায় চরিত্রের ব্যাপ্তি সীমিত হলেও অভিনয়ে রাজি আছি।