পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করা এবং তা প্রচারের অভিযোগে মামলা করেছেন, অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। নিহতের স্বামী, সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার ও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাদী বনজ কুমার মজুমদারের পক্ষে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
পিবিআই সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলার আসামিরা হলেন ইলিয়াস হোসাইন (৪৮), সাবেক পুলিশ সুপার মো. বাবুল আকতার (৪৬), বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু (৪৫) ও বাবুল আক্তারের বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া (৭২)।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘পিবিআই প্রধান স্যারের পক্ষে থানায় মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে আসেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। অভিযোগপত্র মামলা হিসেবে নথিভুক্তি করা হয়েছে। মামলা নম্বর-২৪। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলামকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেই ভিডিওতে ইলিয়াস বলেন, মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসিয়েছেন বনজ কুমার মজুমদার। এ ছাড়া বাবুলকে রিমান্ডে নির্যাতন ও মামলায় মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
ইলিয়াসের ভিডিওটি প্রকাশের পরই বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। তবে মামলার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।
ইলিয়াসের প্রকাশ করা সেই ভিডিও নিয়ে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল পিবিআই। সেখানে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করার কথা ছিল বনজ কুমার মজুমদারের। তবে অনিবার্য কারণবশত সংবাদ সম্মেলনটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানায় পিবিআই।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ঘটনার সময় বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। পরে তিনি চট্টগ্রামে ফিরে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুলের সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। পিবিআই এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে দুটি মামলায় তদন্ত করছে ।