“তারা অভিযোগ করেছেন ২০০৯ সাল থেকে নাকি র্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদ যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক তার বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন। অথচ আমি র্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেওয়া হয়েছে? এজন্য আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই যারা সত্তর সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি। যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৪টি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা ৩ বছর চেষ্টা করেছে কথিত নিষেধাজ্ঞার জন্য।’
আইজিপি উল্লেখ করেন, ‘বড় সত্য হচ্ছে ২০০৯ সালে আমি এই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনে ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে চাকরিতে ছিলাম।’
advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হচ্ছে যে ৬০০ লোক গুমের অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কোনো তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।’
জাতিসংঘে দু’দিনের পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে নিউইয়র্কে অবস্থানরত আইজিপি ড. বেনজিরকে ‘নাগরিক সংবর্ধনা’র এই আয়োজন করে ‘যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি’। জ্যাকসন হাইটসের সন্নিকটে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিন্দাল কাদির বাপ্পা। মঞ্চে উপবেশন করেন নিউইয়র্কে কন্সাল জেনারেল ড. মুনিরুল ইসলাম।
সংবর্ধিত আইজিপি ড. বেনজির উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ এখন ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে, এমন সময়ে কখনও কখনও কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হয়। দেশের প্রয়োজনে, নাগরিকদের স্বার্থে, মানবিকতার প্রশ্নে কখনও কখনও জেনারেশনকে দায়িত্ব নিতে হয়।’
ড. বেনজির বলেন, ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছি। এখন চলছে মুক্তির লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই লড়াইয়ের জিততেই হবে। দেশের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা রুখে দিতে হবে।’
নানা ঘটনার আলোকপাত করে ড. বেনজির বলেন, ‘এর আগে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে প্রতিবারই বাঙালিরা জয়ী হয়েছে।’
আইজিপি বলেন, ‘২২ জন তথ্য সন্ত্রাসী রয়েছে। এদের জবাব দিতে হবে। আপনি যে মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই বিশ্বাসে যদি চ্যাম্পিয়ন হোন, তাহলে আপনাকেই সেটি পালন করতে হবে।’
বাঙালির চার হাজার বছরের ইতিহাসের আলোকপাত করে আইজিপি বলেন, ‘বঞ্চনা, জুলুম-নির্যাতন, শোষণের কবলে ছিলেন বাঙালিরা। কখনও শাসন ক্ষমতা পাননি। অথচ এই সময়ের মধ্যে চার বাঙালি নোবেল পুরস্কার জয়ী হয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বাঙালিরা রাজনৈতিকভাবে নেতৃত্ব পাননি। বঙ্গবন্ধু সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন এবং তার কন্যা শেখ হাসিনাও একই চেতনায় বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে এনেছেন। তার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এগিয়ে চলছে।
‘বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার এই চলমান লড়াইয়ে আমি সকলের সঙ্গে রয়েছি,’ উল্লেখ করেন ড. বেনজির।