২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে সোমবার শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনায় এসব সড়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেন। যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা এই আলোচনার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তারা এখন আর মাস্তানদের সংগঠন নয়। যুবলীগ এখন আদর্শবাদী কর্মীদের সংগঠন। কর্মীরা এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় না। তাঁরা পড়াশোনা করে।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দরপত্র দখলসহ নানা সন্ত্রাসের ঘটনায় যুবলীগ নিয়ে সমালোচনা ঝড় উঠে। মন্ত্রীরাও নানা সময় ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সড়কমন্ত্রী মনে করেন, সেই সমালোচনা থেকে বের হয়ে এসেছে যুবলীগ। তিনি বলেন,
‘এখন যুবলীগ অফিসে গেলেই মনে হয় এটা একটা লাইব্রেরি, যা তারে নতুন ডাইমেনশন। এর অবদান যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর।
গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণ, বিএনপির সমালোচনা
এক যুগ আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হয় শতাধিক। ২০০৪ সালের সেই হামলার স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা অনেকেই ভিকটিম। আপনারা যখন আমাকে হাঁটতে দেখেন তখন দেখেন আমি খুব দৃঢ়তার সাথে হাঁটছি। কিন্তু আমি সেজদাতে যেতে পারি না। ২০০৪ সাল থেকেই আমি চেয়ারে বসে নামাজ পড়ি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ বছর আমার এমআরআই করা সম্ভব হয়নি। কারণ আমার গলায় স্পিøন্টার। এখনও ১৪ টি স্পিøন্টার আছে অনেক স্পর্শকাতার জায়গায়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ ঘটনার পরে আমাকে নেয়া হয়েছে শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আজকের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে আমাকে প্রথমে নেয়া হয়েছিল কিন্তু তারা গ্রহণ করেনি। ডাক্তাররা না করেছে।’
হামলার এক যুগ পর বিএনপির পক্ষ থেকে এই গ্রেনেড হামলাকে ইতিহাসের কলঙ্কজনক ঘটনা বলা হয়েছে। রবিবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যকে সহজভাবে নেননি ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘এই কলঙ্ক বিএনপির, তৎকালীন জোট সরকার এবং হাওয়া ভবনের। বিএনপির বর্তমান এবং ভবিষ্যত দুটোই কালেমালিপ্ত ২১ আগস্টের ঘটনা দিয়ে। আমি জানি না, এ কলঙ্ক বিএনপি কোন দিনও মুছে ফেলতে পারবে কি না।’
গ্রেনেড হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আলামত নষ্ট করে দেয়ার সমালোচনা করেন সড়ক মন্ত্রী। এর পেছনে তখনকার ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের হাত ছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আজকের অনেকেই মায়াকান্না কাঁদতে পারেন। কিন্তু তখন ইন্টারপল এবং এফবিআই এল, কিন্তু এই ঘটনার তদন্ত হল না। আলামত নষ্ট করে দেয়া হল। আবার স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দিল না। বিচারপতি জয়নুল আবেদিনের নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় সদস্যের তদন্ত কমিশন করে দেয়া হল। সেখানে দায়ী দেখানো হয়েছে ভারত এবং আওয়ামী লীগকে।’
মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতির মঈনুল হোসেন খান নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, যুবনেতা মুজিবুর রহমান চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান হিরণ, আতাউর রহমান আতা, শহীদ সেরনিয়াবাত, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।