এবার তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা জমা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে । গতকাল শনিবার সিন্দুক খুলে সাড়ে ১৬ বস্তায় জমা এই টাকা গোনা হয় বল মসজিদ কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দীন ভূঞা জানান। খবর বিডিনিউজের।
তিনি জানান, সিন্দুকে বাংলাদেশি টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিত ও দিনারসহ নানা বৈদেশিক মুদ্রা এবং স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। এর আগে চলতি বছরের ১২ মার্চ সর্বশেষ দানসিন্দুক খোলার পর এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
শওকত উদ্দীন ভূঞা জানান, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি দানসিন্দুক খোলা হয়। এসব সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে ১৬টি বড় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এরপর শুরু হয় গণনা।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উবায়দুর রহমান ও মাহবুব হাসান, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, রূপালী ব্যাংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলামের তত্ত্‌বাবধানে টাকা গণনায় মসজিদ ও মাদরাসার শতাধিক ছাত্র-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।
এ সময় পুলিশ, আনসার এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
মসজিদ সংশ্লিষ্টরা জানান, মসজিদের প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে মসজিদ কমিটির সভাপতির মাধ্যমে পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেঙের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুঃস্থদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়। বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা দেওয়া হয়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গায় অবস্থিত।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচশত বছর আগে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামের এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031