কোর্ট হিল দিনের বেলা মানুষের আনাগোনায় মুখর থাকে। সন্ধ্যা নামার পর ভিন্ন এক জগৎ। চারদিকে নেমে আসে নীরবতা। বিশেষ করে নতুন আদালত ভবনের পাদদেশের (চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মহানগর দায়রা জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালত রয়েছে এই ভবনে) রাস্তায় অন্ধকারে নেমে আসে। সড়কবাতি থেকেও যেন নেই। মাঝেমধ্যে কয়েকটি জ্বলতে দেখা যায়। তবে প্রায় জ্বলে না। এই সুযোগে সেখানে ভবঘুরে ও মাদকসেবীর উৎপাত বেড়েছে। এসব ভবঘুরের সঙ্গে কয়েকজন নারীও থাকে। চুরি, ছিনতাই, এমনকি সাধারণের পথ আটকানোর ঘটনাও ঘটেছে এ রাস্তায়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন আদালত ভবনের পাদদেশ ঘিরে যে রাস্তা রয়েছে তা কোর্ট হিল থেকে বের হওয়ার রাস্তা। যারা যানবাহন নিয়ে কোর্ট হিলে উঠেন তাদের এই রাস্তা হয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। সাধারণের মতো আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমনকি বিচারকরা (জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার অফিস সংশ্লিষ্টরাও) এ পথ ধরে গন্তব্যে যান। নতুন আদালত ভবনের পাদদেশের এ পথটিকে আস্তানায় পরিণত করেছে মাদকসেবীরা। এখানে বসে তারা কোর্ট হিল এলাকায় চুরি, ছিনতাই করে। বছর দেড়েক আগে এ পথে তারা পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকের গাড়ি আটকায়। কাজ শেষে তখন বিচারক বাসায় ফিরছিলেন। পরে গানম্যান দেখে মাদকসেবীরা পালিয়ে যায়। চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম  বলেন, নতুন আদালত ভবনের পাদদেশের রাস্তা দিয়ে আমিসহ অন্যরা নিয়মিত চলাফেরা করি। কোর্টের কাজ শেষ হতে সন্ধ্যা পার হয়ে যায়। কোর্ট থেকে বের হতে কখনো রাত ৮টা, কখনো ৯টা বেজে যায়। এ সময় ভবঘুরে কিছু যুবককে দেখা যায়। তাদের সাথে নারীও থাকে। রাস্তার পাশে বসেই তারা নিয়মিত মাদক সেবন করে। তাদের দেখে ভয় হয়। রাস্তাটা প্রায় সময় অন্ধকার থাকে। অনেকগুলো লাইট জ্বলে না।
তিনি জানান, ১৯ জুন আদালত ভবনের নিচ থেকে ৭ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকের গাড়ি চালক সুজন দে’র ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চুরি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানায় তিনি অজ্ঞাত চোরদের বিরুদ্ধে জিডি করেন। জিডিতে উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন আদালত ভবনের নিচে তার কালো রঙের মোটরসাইকেলটি রেখে উপরে উঠেন। পরে নিচে নেমে দেখেন তালা মেরে পার্কিং করা গাড়িটি সেখানে নেই। আশেপাশে খোঁজাখুজি করেও এটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
কোর্ট কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, কোর্ট এলাকায় অনেক কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। চুরি হয়ে যায়। আমাদের ধারণা ভবঘুরে মাদকসেবীরাই এসবের জন্য দায়ী। তাদেরকে এখান থেকে উৎখাত না করলে বড় কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির আজাদীকে বলেন, জায়গাটা একটু অন্ধকার থাকে। বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। আমরা সেখানে রোববার (আজ) থেকে চারজনের একটা টিম রাখব। আশা করছি, এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031