দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন কম সময়েই ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত করতে পারবেন । ভ্রমণের সময় কমে এসেছে এক-তৃতীয়াংশ। ফলে স্বাভাবিকভাবে সড়ক পথে যাতায়াত বাড়বে। নৌপথে আগের মতো আর যাত্রীর চাপ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে লঞ্চে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর পরামর্শ এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে লঞ্চ মালিকরা বলছেন, লঞ্চ ভাড়া কম, নিম্নআয়ের মানুষের যাতায়াত, সড়ক পথ পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়াসহ বেশ কিছু কারণে এখনই চিন্তার কিছু নেই। বরং সাময়িক এই যাত্রী সংকটের চেয়ে নদীর নাব্যতা নিয়েই তাদের বেশি চিন্তা।
নৌপথ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লঞ্চের যাত্রা যেমন আরামদায়ক, তেমনি নিরাপদ। আবার রাতের যাতায়াতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হয় না। একটি লঞ্চে দেড়-দুই হাজার যাত্রী পরিবহন করা যায়। অথচ এত যাত্রী সড়ক পথে পরিবহনে ৩৫ থেকে ৪০টি বাসের প্রয়োজন। কিন্তু এ অঞ্চলের সড়কগুলো এখনো তেমন প্রস্তুত নয়। তাই ভবিষ্যতেও নৌপথের জনপ্রিয়তা থাকবে। এ ছাড়া লঞ্চ খাতে পর্যটনকেন্দ্রিক বিনিয়োগেরও চিন্তাভাবনা আছে লঞ্চমালিকদের।
জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি রুটে ঢাকার সদরঘাট থেকে ২২৩টি লঞ্চ চলাচলের অনুমতি রয়েছে। এই রুটে সাধারণত ৮০ থেকে ৮৫টি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু দুদিন আগে পদ্মা সেতু চালুর কারণে এসব লঞ্চের যাত্রী কমেছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন গত ২৫ জুন সদরঘাট থেকে ৪৬টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এসব লঞ্চে পরিবহন করা হয়েছে ৮ হাজার ২৪৪ জনের মতো যাত্রী।
পরদিন ৫৭টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে ঢাকা থেকে, তাতে যাত্রী গেছে ১১ হাজার ৭২৮ জন। অর্থাৎ সেতু উদ্বোধনের পরদিন ১১টি লঞ্চ বেশি চলাচল করলেও বাড়তি যাত্রী পাওয়া গেছে মাত্র ৩ হাজার ৪৮৪ জন। তার আগে ২২ জুন ৭২টি লঞ্চে ১৩ হাজার ৮৭৪ ও ২৪ জুন ৮০টি লঞ্চে ১৬ হাজার ৯৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর আপাতত যাত্রী কমলেও পরে বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন লঞ্চ ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, লঞ্চের আয়ের বড় উৎস নিম্নআয়ের যাত্রীরা, যারা ডেকে কম খরচে আরামে যাতায়াত করেন। তারা দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া দিয়ে বাসে যাতায়াত করবেন না। তবে কেবিনে হয়তো যাত্রী কমবে। আর বিলাসবহুল লঞ্চের জন্য পর্যটনকেন্দ্রিক চিন্তা রয়েছে।
লঞ্চমালিক সাইদুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু এ অঞ্চলের মানুষের আশার প্রতীক। কিন্তু সেতু চালু হলেও লঞ্চে যাত্রী কমবে না। কারণ বাসে ঢাকা থেকে বরিশালে যেতে মাথাপিছু কমবেশি ৬০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। বিপরীতে লঞ্চে ভাড়া মাত্র ২৫০ টাকা। ক্লান্তিহীন ও আরামদায়ক ,এ ছাড়া লঞ্চযাত্রা সাশ্রয়ী ।