অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন দেশে এক লাখ ২৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের মধ্যে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে ২১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা আদায় করা যাচ্ছে না বলে । গতকাল জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান। খবর বিডিনিউজের।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সিআইবি ডাটাবেইজে দেশের সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ২৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। এর বাইরে উচ্চ আদালতের নির্দেশ বহাল আছে এমন ঋণস্থিতির পরিমাণ ২১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। যা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আদায় করতে পারছে না। এসব ঋণ আদায়ে খেলাপি গ্রাহকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এক ব্যাংকের খেলাপি অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারছে না। ব্যাংকগুলোকে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধন করে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে বলেও জাতীয় সংসদে জানান মুস্তফা কামাল।
জামালপুর-১ আসনের সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। অর্থপাচারের পরিমাণ নির্ধারণ অত্যন্ত দুরূহ বিষয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, গবেষণা সংস্থা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে প্রাক্কলন করে থাকে। যার যথার্থতা ওই সকল প্রতিষ্ঠানও দাবি করে না।
উক্ত সংস্থাসমূহের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থপাচার হয় সে বিষয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য পরিলক্ষিত হয়। তবে পাচারের সম্ভাব্য উৎসগুলো বন্ধ করার পাশাপাশি অর্থপাচার রোধ এবং পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর এবং সকল সংস্থা একযোগে কাজ করছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে পাচারকৃত ২০ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৮৮ সিঙ্গাপুর ডলার ফেরত আনা হয়েছে। পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ।