বিশেষজ্ঞরা বিএম কন্টেনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের পর সন্নিহিত এলাকায় এসিড বৃষ্টির কোনো আশংকা নেই বলে মন্তব্য করেছেন। গতকাল সোমবার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসিড বৃষ্টির আতংক ছড়ানোর প্রেক্ষিতে একাধিক রসায়নবিদ এবং বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তারা এসিড বৃষ্টির আশংকা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এগুলো গুজব। সামাজিক অস্থিরতা তৈরির জন্য কোনো বিশেষ মহল এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে।
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে এসিড বৃষ্টির তথ্য ছড়ানো হচ্ছে যে তাতে সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীর মাঝে আতংক তৈরি হচ্ছে। এই ব্যাপারে প্রখ্যাত রসায়নবিদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসিড বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড থাকলেও তীব্র তাপমাত্রায় তা ভেঙে পানি ও অক্সিজেন তৈরি হয়েছে। অক্সিজেনের প্রেসারে কন্টেইনারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। অক্সিজেন নিজে না জ্বললেও জ্বলতে সাহায্য করে। এতে করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এত তীব্র তাপমাত্রার মধ্যে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড থাকার কথা নয় বলে মন্তব্য করে প্রফেসর বেনু কুমার দে বলেন, কিছু হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বাতাসে থাকলেও তার পিএইচ (অম্ল-ক্ষারক পরিমাপক স্কেল) ৫ এর নিচে হবে না। এতে করে যে এসিড বৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে তার কোনো আশংকা নেই।
অপর একজন বিশেষজ্ঞ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রকৃতপক্ষে কেনো কেমিকেল অম্লধর্মী হলেই এসিড বৃষ্টি ঘটাবে এমনটা নয়। হাউড্রোজেন পারঅঙাইড মৃদু অম্লধর্মী। এটি গ্যাসীয় অবস্থায় পানির সাথে বিক্রিয়াই করে না। তরল অবস্থায় পানিতে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোনিয়াম ও হাইড্রঙিল আয়নে বিভাজিত হয়। ফলে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের বাতাসে কোনোরকম এসিড তৈরির সুযোগই নাই। তবে অধিক মাত্রায় হাউড্রোজেন পারঅক্সাইডযুক্ত বাতাসে শ্বাস নিলে শ্বাসকষ্টসহ ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিভিন্ন ল্যাবে দুর্ঘটনাজনিত কারণে ঘটতে পারে। এটি সাধারণভাবে ঘটার কথা নয়।