‘ই–হজ ব্যবস্থাপনা’সহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে হজযাত্রীদের কষ্ট দূর করতে ‘সব ধরনের পদক্ষেপ’ তার সরকার নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। গতকাল শুক্রবার ২০২২ সালের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ‘আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আজকে ডিজিটাল হজ ব্যবস্থা অর্থাৎ ‘ই–হজ ব্যবস্থা’ প্রবর্তন করা হয়েছে। যার ফলে পূর্বে যেমন হাজীদের কষ্ট হত, এখন আর সেই কষ্ট হয় না। সেই কষ্টটা আমরা দূর করতে পেরেছি।’ গণভবন থেকে রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
হজযাত্রা সহজ করতে সরকারের আরও কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রোড টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ’ এর মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও প্রযুক্তিনির্ভর করা সম্ভব হয়েছে।
ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই হয়ে যায়, সেখানে কোনো হয়রানি হয় না। মালপত্রও যাতে যথাযথ স্থানে পৌঁছে যায়, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিমান হাজিদের নিয়ে যাচ্ছে, ডেডিকেটেড সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। আমরা যথাযথভাবে হজ ব্যবস্থাপনার অনেক উন্নতি করতে পেরেছি।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের ৫৭ হাজার মুসলমান। হজের প্রথম ফ্লাইট যাবে ৫ জুন; চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার ৮ জুলাই হজ হতে পারে। হজ ব্যবস্থাপনা যাতে সুষ্ঠু হয়, সেজন্য ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন–২০২১’ প্রণয়নের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, যাতে কোনো রকম হয়রানি ছাড়া হজে যেতে পারেন, হজ পালন করতে পারেন; সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। অনেক ব্যবস্থা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে করেছি। হজ ও ওমরাহ পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে হাজিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ভোগান্তি বোঝার চেষ্টা করার কথা অনুষ্ঠানে বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই আমাদের প্রচেষ্টা ছিল হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা। আমরা ধাপে ধাপে সেই ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। সৌদি বাদশাহ ও দুই পবিত্র মসজিদের রক্ষক যারাই ছিলেন, তারা আমাদের হজ ব্যবস্থাপনা সহজ করতে সহায়তা করেছেন।
হজ পালনের সময় ইবাদত বন্দেগির পাশাপাশি সেদেশের আইন–কানুন মেনে চলতে হাজযাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যারা যাবেন হজে, অবশ্যই সৌদি আরবের সকল নিয়ম–কানুন এবং আইন মেনে চলতে হবে। সবাই এটা মেনে চলবেন, আমরা সেটাই আশা করি। কারণ ইবাদত বন্দেগি করার পাশাপাশি দেশের মানসম্মান রক্ষা করাও সকলের কর্তব্য। সেই কথাটা আপনারা মাথায় রাখবেন। তাছাড়া নিজেরা নিজেদের সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন, যাতে সবাই সুস্থ থেকে আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে পারেন। দেশ ও দেশের জনগণ এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মত এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে বিশ্ব যাতে রক্ষা পায়, মানবজাতি যাতে রক্ষা পায়, সেই সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশ রক্ষা পায়– সেই দোয়াও করবেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, সভাপতি শাহাদত হোসেন তসলিম হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) ।