ঢাকা : পুলিশ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিদেশে অবস্থানরত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছে ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন দেশে ২১ আগস্ট হামলার আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের দেশে ফেরাতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনে (ইন্টারপোল) চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দু’টি মামলায় ১৯ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। এরমধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে, মাওলানা তাজউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় ও মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন।
পুলিশ সদর দফতরের কর্মকর্তারা বলেন, অনেক দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তির জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে।
‘দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তবে এই মামলার পলাতক আসামি হারিছ চৌধুরীসহ অন্যান্য পলাতকদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি- মিডিয়া) জালাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করছে পুলিশ। পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে আবেদন করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকারের পরিকল্পনায় হরকাতুল জিহাদ (হুজি) আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালায়। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির এটা ছিলো সবচেয়ে বড় হামলা।
এ হামলার পর হুজির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা গ্রেফতার হওয়ায় সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এই জঙ্গি সংগঠনটি। এরপর দু’একবার চেষ্টা করেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে সংগঠিত হতে পারেনি।
এ বিষয়ে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘জঙ্গিবাদের বিশ্বায়নের এই যুগে সে কোনো জঙ্গি সংগঠনই মাথা চাড়া দিতে পারে! হুজি যেন আবার সংগঠিত হতে না পারে সে বিষয়ে আমরা নজরদারি করেছি।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। দিনটি ছিলো, শনিবার। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সন্ত্রাস ও বোমা হামলার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমাবেশ ডাকে।
সমাবেশে একটি ট্রাককে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের পর সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে হঠাৎ শুরু হয় নারকীয় গ্রেনেড হামলা। মুহূর্তেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ।
শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে একের পর এক বিস্ফোরিত হয় গ্রেনেড। আওয়ামী লীগ নেতারা ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক মানবঢাল তৈরি করে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে।
উপর্যুপরি ১৩টি গ্রেনেডে শেখ হাসিনার মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় গাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি চালায় ঘাতকরা। বুলেটপ্রুফ গাড়ি হওয়ায় সেদিন প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা।