প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হজযাত্রা নির্বিঘ্নে করতে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে । গত ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে হজ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত পর্যালোচনাসভায় এ নির্দেশনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর পর সেগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এদিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও দুদিন বাড়ানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গত রোববার রাতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে নিবন্ধনের শেষ সময় ছিল রবিবার ব্যাংক লেনদেনের সময় পর্যন্ত।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ৯ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- হজযাত্রী পরিবহনে সম্ভাব্য সব ফ্লাইট ডেডিকেটেড হতে হবে। কোনোভাবেই যাতে ফ্লাইট বিপর্যয় না হয়, সে বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ২. হজযাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে সব এয়ারলাইন্সকে ‘রুট-টু-মক্কা ইনিশিয়েটিভ’র বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করতে হবে। ৩. হজ ক্যাম্পেই সব ইমিগ্রেশন শেষ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক বুথ নিশ্চিত এবং বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত হিসেবে বিমানবন্দরে দুটি বুথ স্থাপন করতে হবে। ৪. সুষ্ঠুভাবে ইমিগ্রেশন শেষের জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রিম সরবরাহ করতে হবে। ৫. হজযাত্রীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ডেডিকেটেড হাসপাতাল নির্ধারণসহ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। ৬. হজযাত্রীদের করোনা টিকা গ্রহণসংক্রান্ত ‘সুরক্ষা অ্যাপ’-এ রক্ষিত তথ্য পেতে হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে সহজলভ্য করতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। ৭. হজযাত্রীদের যাতে কোনো ধরনের কষ্ট না হয়, সে লক্ষ্যে হজ ক্যাম্পে সব সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষণিক সেবাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। ৮. এয়ারপোর্ট থেকে হজ ক্যাম্পে যাতায়াতের রাস্তা সচল ও বাধাহীন রাখতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ৯. চলতি বছরের হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সফলভাবে শেষ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
নিবন্ধনের সময় বাড়ল আরও ২ দিন : সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও দুদিন বাড়ানো হয়েছে। গত রবিবার রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে রবিবার ব্যাংক লেনদেনের সময় পর্যন্ত নিবন্ধনের শেষ সময় ছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ ১-এর নিবন্ধন কার্যক্রম ২২ মে সন্ধ্যায় বন্ধ করা হয়েছে। শূন্য কোটা পূরণের জন্য সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী বর্ধিত সময়সূচি ঘোষণা করা হলো। নিবন্ধনের অর্থ পরিশোধে বর্ধিত সময় শুরু ২৩ মে, নিবন্ধনের অর্থ পরিশোধে বর্ধিত সময়ের শেষ তারিখ ২৪ মে (ব্যাংকিং সময় পর্যন্ত)।
বর্ধিত সময়ে প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ২৫ হাজার ৯২৫ থেকে সর্বশেষ ক্রমিক ২৭ হাজার ১০৫ পর্যন্ত হজযাত্রীরা নিবন্ধনের আওতায় আসবেন। সময়ে নিবন্ধনকারী ব্যক্তিরা শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ ২-এর অধীন নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, রবিবার পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫১ হাজার ৮৫১ এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৮৪৯ জন হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ ১-এ ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা এবং প্যাকেজ ২-এ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩০ টাকা। বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর সাধারণ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই পবিত্র হজ।
এদিকে ই-হজ সিস্টেমের বিভিন্ন বিষয়ে কোনো এজেন্সি বা মোনাজ্জেমদের সমস্যা মনে হলে মেসেজ দিয়ে যোগাযোগ করা যাবে। গতকাল সোমবার সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিস থেকে ঢাকার হজ অফিসে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ই-হজ সিস্টেমের বিভিন্ন বিষয়ে কোনো এজেন্সি বা মোনাজ্জেমদের সমস্যা মনে হলে ই-হজ সিস্টেমে টিকিট অপশন থেকে মেসেজ কিংবা সরাসরি আহমেদ সাঈদীর ০৫৪৬৯০৫২৬৮ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।