রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করে হরতাল কর্মসূচি পালন করছেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সকাল থেকেই গণতান্ত্রিক বাম জোটের ডাকা আধাবেলা হরতাল চলছে। এতে ঘর থেকে বের হওয়া সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও হরতালকে ‘যৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করছেন। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধি হচ্ছে। বাজারে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সব কিছুর দামই এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। দ্রুতই নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
সোমবার সরজমিনে পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৬টার দিকে হরতালে সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে মিছিল বের করেন।
এরপর মিছিলটি মতিঝিল, গুলিস্তান, বিজয়নগর ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়। এসময় পল্টন মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয় তারা।
এতে স্বাভাবিক যানচলাচল ব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে হেঁটে যাচ্ছেন কর্মজীবীরা। হরতালের সমর্থন জানিয়ে রেজাউল ইসলাম নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, হরতালের জন্য আমাদের সাময়িক সমস্যা হলেও আমরা চাই জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়া হোক। এখন তেল-ডাল-চাল সবকিছুর দামই বেশি। আমাদের জন্য জীবন চালানো তো কঠিন হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে সব কিছুর দাম কমানো উচিত। হোসেন বলেন, এই হরতাল পুরো যৌক্তিক। বাজারে কোন কিছুর দামেই নিয়ন্ত্রণ নাই। সবকিছুই আমাদের নাগালের বাইরে।
পাঠাও রাইড চালক সেলিম শেখ বলেন, আমরা এখন মন চাইলেও ভালোমন্দ কিছু কিনে খেতে পারি না। গরুর মাংস তো কিনতেই পারি না। সব কিছুর দাম বেশি। কিন্তু করোনায় আমদের আয় আরো কমেছে। অথচ জিনিসত্রের দাম বেড়েই চলছে। আমরা চাই সব কিছুর দাম কমে যাক। হরতালে আমাদের যদি এখন ভোগান্তিও হয় তাও চাই দাম যেন কমে যাক। এতেই শান্তি আমাদের।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি মানবজমিনকে বলেন, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিচ্ছেন। যদিও অনেকেই কাজে নেমেছেন। নাভিশ্বাস পরিস্থিতি। কর্মজীবী মানুষকে কাজে যেতে হচ্ছে। অনেক বাধ্যবাধকতা আছে। পরিবহনগুলোকে নামানো হয়েছে। মালিকরা বাধ্য করেছেন। কিন্তু যারা পরিবহন শ্রমিক আছেন, কাজে বাধ্য হয়েছেন তারাও এই হরতালের সমর্থন করছেন। সাধারণ মানুষও সমর্থন প্রকাশ করছেন। মানুষের এই ঐক্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। এছাড়া সকল বিরোধী দলও আমাদের এই হরতালকে সমর্থন জানিয়েছেন। এরমধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের গণতান্ত্রিক মুক্তির জন্য একটা নতুন লড়াই এর সূচনা ঘটছে। এই ঐক্য আরও বর্ধিত হবে, সম্প্রসারিত হবে এবং জনগণের একটা বড় উত্থানের জায়গা তৈরি করবে।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে আমরা হরতাল পালন করছি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের উপর নানা ধরনের আক্রমণ হচ্ছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। খুলনায় আমাদের দলের আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেলসহ বাম জোটের বিভিন্ন নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকায় মিরপুরে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। মোহাম্মদপুরে আক্রমণ হয়েছে।