বাবুল চন্দ্র সরকার ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না রাজবাড়ী সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক । তিনি বাবু সাহেব নামে পরিচিত। অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নামজারি, মিসকেসসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ তার হয়রানির শিকার হন। তাকে ম্যানেজ না করলে মেলে না সমাধানের নিশ্চয়তা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না তার দপ্তরে। ‘স্যারকে ম্যানেজ করে’ যেভাবেই হোক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কাজ বুঝে টাকা নেন এই বাবু। এদিকে গোপনে ধারণ করা এই কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও এসেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতে। ডিভিওতে দেখা যায়, দুজন বৃদ্ধ নামজারির একটি কাজে তার হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। এ কাজে সহযোগীতা করছেন ভূমি অফিসের এক দালাল।
ভিডিওটির শুরুতে এই কর্মকর্তা এই কাজের দালালকে উদ্দেশ্য করে একটু বিরক্তিকর সুরে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি এই সকাল বেলা কি পচা কামডা (কাজ) নিয়ে আইছো।’ পাশে থাকা লোকটি তখন বলেন, ‘না বাবু পচা না, এগুলো করে দিতে হবে। কোনো উপায় নাই।’ পরে এই কর্মকর্তা আরো কিছু টাকা দাবি করলে (শব্দ অস্পষ্ট) দালাল তাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
জেলার সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা এলাকার একজন ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাবু টাকা ছাড়া কাজ করতে চায় না। টাকা না দিলে ফাইল ফেলে রাখে, ঝুলিয়ে রাখে। অনেক সময় নানা অজুহাত দেখিয়ে বড় স্যারের টেবিল পর্যন্ত ফাইল পৌঁছাতে দেয় না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক বাবুল চন্দ্র সরকার বলেন, ভিডিওটি আমার দপ্তরের। এগুলো রাখেন। নিউজ করার দরকার নাই।
কর্মকর্তার এমন ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, আমার কথা বলতে হলে জেলা প্রশাসক স্যারের অনুমতি প্রয়োজন। তবে আমার কাছে কেউ সুনিদিষ্ট করে অভিযোগ দিলে কঠিন ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আপনি আমার কাছে যেকোনো মাধ্যমে ভিডিওটি পাঠান। আমি ভিডিওটি দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।