রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অডিও কেলেঙ্কারির জেরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের দেওয়া পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। আজ মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মুরাদ হাসানের পদত্যাগ ‘অবিলম্বে’ কার্যকর হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে ‘বর্ণ ও নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্যেরর কারণে মুরাদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে সমালোচনা চলছিল কয়েক দিন ধরে। এর মধ্যে এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র দেওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার পর ইমেইলে মুরাদের পাঠানো পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়। সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ‘ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায়’ তিনি পদত্যাগ করতে চান।
পদত্যাগপত্রে মুরাদ লিখেছিলেন, তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মে, যদিও ওই দায়িত্বে তিনি এসেছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে। ওই ভুলের কারণে এবং ইমেইলে পাঠানোয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা ফেরত পাঠায়। পরে ভুল সংশোধন করে ‘হার্ড কপি’ আকারে দেওয়া হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিকেলে তা গ্রহণ করে। পরে রাতেই সে পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান তালুকদারের ছেলে মুরাদ ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হন।
২০১৯ সালে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুরাদ। ওই বছর মে মাসে তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসনের এমপি। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর তাকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।