স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী যেভাবে দেশে ভ্যাকসিন চলে আসছে এতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার অন্তত ৫০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সংগঠন ইউএইচএফপিও কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজে এই মুহূর্তে কোনো ভ্যাকসিন উৎপাদন না করলেও দেশে এখন পৃথিবীর উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের ভ্যাকসিনই চলে এসেছে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক মহলে সম্পর্কের কারণে। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে কথা দিয়েছিলেন দেশের সব মানুষকে তিনি ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবেন। তিনি তার কথা অনুযায়ীই আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরাও তার কথা অনুযায়ী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।’দেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলগামী শিশুদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে দেশের সব মানুষই ভ্যাকসিন পাবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি মাসে দেশে অন্তত ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন চুক্তি অনুযায়ীই চলে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে চুক্তি অনুযায়ী আরও ভ্যাকসিন আসা শুরু হয়ে গেছে। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের ভ্যাকসিনও চলে আসছে। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও দেশে আসছে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছি, স্বাস্থ্যখাত চাইলে একদিনে ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনও দেওয়া সম্ভব। কাজেই চাহিদা অনুযায়ী এখন থেকে দেশে প্রতি মাসে ৩ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন চলে এলে আমরা সেগুলো ভালভাবেই মানুষকে দিতে সক্ষম হব।’

দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে জাতীয় সংসদসহ নানা জায়গায় সরকারের বিরোধী পক্ষের সমালোচনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্যখাত গত দুই বছর যাবৎ টানা ডেঙ্গু মোকাবিলা করাসহ করোনার দুইটি ঢেউ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। ব্লুমবার্গ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সম্প্রতি জাপানের নিপ্পন কর্তৃক পরিচালিত জড়িপে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬ তম স্থান অর্জন করেছে। একটি অতি ঘনবসতি দেশের জন্য এটি ছোটখাটো অর্জন নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বারবার স্বাস্থ্যখাতের প্রশংসা করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অথচ এক শ্রেণির মানুষ জেনে বা না বুঝেই দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে ঢালাও সমালোচনা করে গেছে। এই সমালোচনা তারা এজন্যই করেছে কারণ তারা জানে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে দেশের সব শ্রেণির মানুষের আগ্রহ রয়েছে। তারা জানে, স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে বিব্রত করা সব থেকে সহজ। স্বাস্থ্যখাতের মাধ্যমে তারা আসলে সরকারকে বারবার বিব্রত করতে চেয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, প্রতি ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যের কাছে সমালোচকরা চুপসে গেছে এবং হেরে গেছে। সামনে আবারও এরকম কঠিন সময় আসতে পারে। কাজেই স্বাস্থ্যখাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই আরও সতর্ক থাকতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নানারকম দাবির কথাগুলো শোনেন ও সবগুলো দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় করোনা মোকাবিলায় উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা ও আন্তরিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলে, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এবাদুল করীম এমপি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাচিপ এর মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ। সভায় মূল প্রতিপাদ্য পাঠ করেন ইউএইচএফপিও-এর আহ্বায়ক ডা. মোবারক হোসেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031