পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি গ্রাহক প্রতারণা ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে ই-কমার্সের ৬০টির তালিকা ও ৩০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে । রিং আইডির মালিক শরিফুল ইসলাম ও আইরিন ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে কানাডায় চিঠি দেবে পুলিশ। এ ছাড়া থলে ডটকম ও উইকুম ডটকমের গ্রাহক প্রতারণার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা কম দামে টিভি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল, বৈদ্যুতিক ফ্যানসহ বিভিন্ন পণ্য ছাড়ে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানান।
অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা ৬০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের তালিকা করেছি। এর মধ্যে ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিয়ত নজরদারি করা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঠিকঠাক কাজ করছে। আবার অনেকেই অভিযানের কথা শুনে পণ্য দেওয়া এবং অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। থলে ডটকম ও উইকুম ডটকম নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই নামে প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের মালিক ও পরিচালনা পর্ষদ একই। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- প্রতিষ্ঠান দুটির হেড অব অপারেশন মো. নজরুল ইসলাম, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সোহেল হোসেন, ডিজিটাল কমিউনিকেশন অফিসার মো. তারেক মাহমুদ, বিপণন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, কলসেন্টার কর্মকর্তা মুন্না পারভেজ ও ব্যবস্থাপক মো. মাসুম হাসান।ইমাম হোসেন বলেন, প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির কথা বলে ফেসবুক পেজ ও অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানগুলো। ৩০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করার কথা থাকলেও তারা ৫০ দিনেও পণ্য দেয়নি। তাদের অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে চেক দেয় প্রতিষ্ঠানটি। চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলে অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই জানায়। এভাবে কয়েক হাজার গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল প্রতিষ্ঠান দুটি।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, রিং আইডির প্রায় ২০০ কোটি টাকা সিআইডির অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক জব্দ করেছে। তবে রিং আইডির হাতিয়ে নেওয়া টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেশি। হাতিয়ে নেওয়া সেই অর্থ তারা কোথায় রেখেছে তা এখনো অজানা। রবিবার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বড়গ্রাম এলাকা থেকে রিং আইডির এজেন্ট মো. রেদোয়ান রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রিং আইডির মালিক শরিফুল ইসলাম ও আইরিন ইসলামকে কানাডা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মহিউল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, সিআইডি এখনো রিং আইডির মালিকদের ফেরানোর বিষয়ে কিছু জানায়নি। জানালে প্রয়োজীন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।