বিজ্ঞানীরা দুই শতাব্দী পরে গ্রহাণু বেনুর অবস্থান কোথায় হবে তা ভালোভাবেই নিজেদের আয়ত্ত্বে আনতে পেরেছে । এ নিয়ে তাদের মধ্যে আর কোনো সন্দেহ থাকল না। তবে এই খবরের সাথে এসেছে আরেক দুঃসংবাদ। এই গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, উল্কাপিণ্ডের পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা আগে যা করা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি।

তবে গতকাল বুধবার বিজ্ঞানীরা বলেছেন,আগামী শতাব্দীতে বেনু পৃথিবীতে হামলে পড়ার আশঙ্কা একেবারেই কম। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের বিজ্ঞানী ডেভিড ফার্নোচিয়া বলেন, আগামী এক কিংবা দু-শতাব্দীতে বেনুর আঘাত হানার আশঙ্কা দুই হাজার ৭০০-এর মধ্যে এক শতাংশ কিংবা এক হাজার ৭৫০-এর মধ্যে এক শতাংশ হতে পারে। নাসার ওসিরিস-রেক্স মহাকাশযানের বদৌলতে বেনুর গতিপথ নিয়ে বিজ্ঞানীদের অনেক ভালো ধারণা রয়েছে।

যাকে নিয়ে এত কথা, এত গবেষণা, সেই বেনু হচ্ছে এপোলো গ্রুপের একটি গ্রহাণু। নাসার লিনিয়ার প্রজেক্টের মাধ্যমে এটি আবিষ্কৃত হয়েছিল । পৃথিবীর সঙ্গে এর সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। বেনু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য নাসা ওসিরিস রেক্স মিশন পরিচালনা করেছে, যা গ্রহাণুটির গঠনগত প্রকৃতি ও আকৃতি সম্পর্কে সুষ্ঠু ধারণা দিতে পারবে।
গ্রহাণু বেনুর ঘূর্ণায়মান ধ্বংসস্তূপ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরোক্ষ গতিপথে ফিরে আসছে ওসিরিস-রেক্স। সৌরজগতের পরিচিত বিপজ্জনক গ্রহাণুর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটির একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় বেনুকে। আরও দুবছর পর ২০২৩ সালে এই নমুনা পৃথিবীতে এসে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওসিরিস-রেক্স ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে বেনুর পৃথিবীতে আঘাত হানা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হয়, ২২০০ সালে এটির আঘাত হানার শঙ্কা দুই হাজার ৭০০-এর মধ্যে এক শতাংশ। আর ২৩০০ সালে সেই আশঙ্কা এক হাজার ৭৫০-এর মধ্যে এক শতাংশ। আর এককভাবে সবচেয়ে ভয়ের দিনটি হচ্ছে ২১৮২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর।

২১৩৫ সালে বেনু পৃথিবীতে সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসতে পারে। তখন এটি চাঁদের অর্ধেক দূরত্ব দিয়ে অতিক্রম করবে। নাসার গ্রহ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা লিন্ডলি জনসন বলেন, বেনু যদি পৃথিবীতে আঘাত হেনেই বসে, তবে প্রাণীজগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে না। বরং গ্রহাণুর চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণ বড় জ্বালামুখ তৈরি করতে পারবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031