সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসরম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে । এ ঘটনায় দুই নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক শ্রমিক। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সোয়া ৮টায় কারখানার ছাদে আটকে আছে দুই শতাধিক শ্রমিক। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক আল আমির জানান, কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন।
করোনার কারণে কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠারে স্টোরেজ ও কার্টন এবং ফুড সেকশনের ৬তলা ভবনে ৪ শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় সে দোতলায় ফুড প্যাকেজিং করার সময় হঠাৎ নিচ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেন। পরে সে দোতলার গ্লাস ভেঙে নিচে লাফ দেয়। ৩তলার কার্টন সেকশন থেকে লাগা আগুন মুহূর্তে দোতলার টোস্ট সেকশন ৩ তলার লাচ্ছি ও লিচু সেকশন ৪ ও ৫ তলার স্টোর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কারখানার শ্রমিকরা আতঙ্কে গিয়ে ছাদে আশ্রয় নেয়। এ সময় ছাদ থেকে অনেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করে।
স্প্না রানী (৪২) ও মিনা আক্তার (৪৪) নামের দুই নারী শ্রমিক নিহত হয়। নিহত স্বপ্না রানী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গুলডুবা গ্রামের যতীন সরকারের স্ত্রী এবং নিহত মীনা আক্তার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার উত্তরকান্দা কুকিমাদল এলাকার হারুনের স্ত্রী। তারা দুজন দোতলার অডি সেকশনের ক্যাজুয়্যাল শ্রমিক বলে নিশ্চিত করেছেন সেই সেকশনের অপারেটর আজিজ মিয়া এবং তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউএস বাংলার চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন। এছাড়া এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইউএস বাংলা মেডিকেলে ১৭ শ্রমিককসহ রূপগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ঢাকায় শতাধিক শ্রমিককে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের অ্যাডমিন ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, সেখানে কর্মরত ৪ শ’ শ্রমিকের মাঝে অন্তত ২শ’ শ্রমিক এখনো ছাদে আটকে আছে। তাদের উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবে সেটা কয়েক কোটি টাকা। নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আল আরিফিন গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ, ডেমড়া, কাঞ্চন ও পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, গ্যাসের বয়লার বিস্ফোরণের ভয়ে সাবধান হয়ে কাজ করতে হচ্ছে এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত আগুনের সূত্রপাতের উৎস নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারেও তৎপর রয়েছে তারা।