শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম চেম্বারের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র এসব কথা বলেন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ার যে অভিযোগ করেছেন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন, কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ। পুরো মন্ত্রণালয়কে তিনি এ ব্যাপারে দায়ী করেননি। এর সূত্র ধরে যারা সরকারের দুর্নীতির কথা বলছেন তারা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হয়ে এটা করছেন বলেও মনে করেন মেয়র।
মেয়র নাছির বলেন, ‘আমরা একটা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখানে ব্যক্তির জন্য তো পুরো প্রশাসনকে দায়ী করা যাবে না। ব্যক্তির জন্য পুরো মন্ত্রণালয়কে অভিযুক্ত করা যাবে না। আমি তো পুরো মন্ত্রণালয়কে দায়ী করিনি।’
গত বুধবার চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘চট্টগ্রাম নগর সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র নাছির অভিযোগ করেন, মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তাকে ৫ শতাংশ করে দিতে রাজি না হওয়ায় করপোরেশনের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাননি। তিনি বলেন, ‘যদি ৫ শতাংশ করে দিতে পারতাম, তাহলে ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আনতে পারতাম।’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর এই বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মেয়রকে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। সাত দিনের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে চিঠিতে। নির্ধারিত সময়েই চিঠির মাধ্যমে জবাব দেবেন বলে শুক্রবার জানান নাছির।
দুর্নীতির অভিযোগ কেন করলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আ জ ম নাছির বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে তো আর লিখিত অভিযোগ করতে যাইনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কি কোনো অভিযোগ করেছি? আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। বক্তব্যগুলো আসবে। যখন একটা প্রশ্ন উত্থাপন করেছি তখন আমি বলব। এখন কেউ যদি আমাকে বলে আপনি তো পারছেন না কিছু করতে। আমি তো বলতে যাব, এসব কারণে সময় লাগছে।’
চট্টগ্রাম চেম্বার থেকে সিটি করপোরেশনকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ১০টি রিকশা ভ্যান প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পাঁচ হাজার এবং দক্ষিণে সাড়ে তিন হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। অথচ চট্টগ্রাম নগরের আয়তন এই দুটির চেয়ে বেশি হলেও এখানে এক হাজার ৭০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। এ জন্য লোকবল নিয়োগের প্রয়োজন হলেও ৩০ বছর আগের জনবলকাঠামোতে চলছে এই সিটি করপোরেশন। এখন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করে সরাসরি বাসা থেকে ময়লা–আবর্জনা সংগ্রহ করতে পারব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। সাংসদ এম এ লতিফ, সিনিয়র সহসভাপতি নুরুন নেওয়াজ সেলিম, সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ এ সময় বক্তব্য দেন।