রোজিনা ইসলামের অপরাধ হচ্ছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে করোনাকালীন স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়ম তুলে ধরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন। এজন্যই তাঁকে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ, তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এই ঘটনায় রোজিনা ইসলামের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাঁর মুক্তি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগ দাবি করছি। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের মূল কথাই হচ্ছে ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা, আর এটাই ফ্যাসিবাদী সরকার ক্রমাগত লঙ্ঘন করে চলেছে।
তিনি সাগর-রুনি হত্যা মামলার কোনো বিচার না হওয়া, ফটো সাংবাদিক শহিদুল ইসলামের মিথ্যা মামলাসহ সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এসব সরকারের পরিকল্পিত কাজ, যাতে কেউ জাতির সামনে সরকারের অন্যায় ও দুর্নীতি তুলে ধরতে ভয় পায়। সবখানে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে এভাবে দেশে একটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। সাগর রুনি হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রুনি আমার চাচাতো বোন।
তার হত্যাকা-ের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বললেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি খুনিদের গ্রেপ্তার করবেন। অথচ ৯ বছর পার হলো সে হত্যাকা-ের কোন কুল-কিনারা হলো না। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে সাংবাদিক ও মিডিয়ার কণ্ঠ চেপে ধরা হয়েছে। মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে নিউজ করলে সাংবাদিকদের হাত-পা ভেঙে দেয়া এমন কি খুন করা, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরা হচ্ছে সরকারের নিত্যদিনের কাজ। তিনি বলেন, এভাবে দেশের যে মূল আত্মা তাকে আঘাত করা হচ্ছে, গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হচ্ছে, যা প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছেন দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকসহ সর্বত্র কিছু চাটুকারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে এ সরকার। আর চামচারা হুক্কাহুয়া করে যাচ্ছে। রোজিনা ইসলাম ইস্যুতে সাংবাদিকসহ সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার আহবান জানান মির্জা ফখরুল।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের অগ্রণী সৈনিক বলেই তাঁকে মিথ্যা মামলার অজুহাতে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে আবার উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি মামুন উর রশীদ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদসহ নেতাকর্মী ও অন্যরা।