ফাইজারের দুই ডোজ টিকা একজন মানুষকে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি সুরক্ষা দেয় ইসরাইলের এক গবেষণায় দেখা গেছে । এর ফলে করোনা ভাইরাস মহামারি কমিয়ে আনতে সহায়ক এই টিকা। একই সঙ্গে হাসপাতালে রোগী ভর্তি, মৃত্যু এবং আক্রান্তের হার কমে যায়। বৃটেনের অনলাইন গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হারে টিকা দেয়া হয়েছে ইসরাইলে। গবেষণায় এটাও পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, ফাইজারের প্রথম ডোজ টিকা আংশিক কার্যকর। তা সংক্রমণের বিরুদ্ধে শতকরা ৫৮ ভাগ সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
শতকরা ৭৬ ভাগ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হাত থেকে বাঁচায় এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় শতকরা ৭৭ ভাগ। পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার লেখকরা মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানচেটে বলেছেন, এই পর্যবেক্ষণ টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার গুরুত্বকে বাড়িয়ে দেয়। তারা আরো লিখেছেন, গবেষণায় প্রাপ্ত ফল বলছে, উচ্চ মাত্রায় টিকা নেয়া হলে তা অর্থদায়কভাবে করোনা মহামারিকে কমিয়ে আনবে। আর এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের আশা জাগিয়ে তোলে। ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্থানীয় লেখক ড. শ্যারন অ্যালরোয়-প্রিইস বলেছেন, এ পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশ বলতে পারেনি যে, সেদেশে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার পরে দেশজুড়ে তাতে কি প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। আমরা যে তথ্য পেয়েছি গবেষণায় তা মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, করোনা ভাইরাসের চ্যালেঞ্জকে বিবেচ্যভাবে কাটিয়ে উঠতে এখনও উপায় আছে।
বাস্তবে সেই আশাটা হলো, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে কার্যকর সহায়তা দেবে টিকা। এক্ষেত্রে ল্যানচেট জার্নালের ভাষ্যকাররা বলছেন, বহু দেশই ইসরাইলকে অনুসরণ করতে সক্ষম হবে না। কারণ, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরাইল শুধু ফাইজার/বায়োএনটেকের টিকা ব্যবহার করেছে। এর আগে ফাইজার কোম্পানি সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসে যে, টিকা দেয়ার পর যেসব ডাটা পাওয়া যাবে তা প্রকাশ করা হবে বাস্তব জগতে। ইসরাইল ২০২০ সালের ২৭ শে ডিসেম্বর থেকে এ বছর ৭ই মার্চ পর্যন্ত লকডাউনে ছিল। এ সময়ে ইসরাইলে করোনা সংক্রমণ অনেক বেশি দেখা দেয়। জানুয়ারিতে সেখানে পিক-এ উঠে যায়। তবে ৩রা এপ্রিলের মধ্যে ১৬ বছরের ওপরে বয়স এমন ব্যক্তিদের শতকরা ৭২ ভাগ, ৬৫ বছরের ওপরে বয়স এমন শতকরা ৯০ ভাগকে ফাইজারের দুটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার সাত দিন পরে শতকরা ৯৫.৩ ভাগ মানুষকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। শতকরা ৯৬.৭ ভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যু থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। লক্ষণযুক্ত এবং লক্ষণযুক্ত নয় এমন সংক্রমণ থেকে যথাক্রমে শতকরা ৯৭ ভাগ এবং শতকরা ৯১.৫ ভাগ সুরক্ষা দিয়ে থাকে। সার্বিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে সুরক্ষিত রেখেছে শতকরা ৯৭.২ ভাগ মানুষকে। টিকা দেয়ার ১৪ দিন পরে সুরক্ষা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।