কালান্তক কোভিড পরপর দু বছর পবিত্র রমজান মাসে ইফতার সমারোহে ছেদ টানলো । শুক্রবার পর্যন্ত মধ্য কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট সরগরম ছিল ইফতার উপলক্ষে। শনিবার থেকে আংশিক লকডাউন বাংলায়। বন্ধ ঐতিহ্যবাহী জাকারিয়া স্ট্রিটের রেস্তোরাঁগুলি আর স্ট্রিট ফুডের বাজার। পার্শিয়ান মতে রমজান বলি, আর এরাবিক মতে রামাদান- জাকারিয়া স্ট্রিট কাঁদবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে। রোজা ভঙ্গের পর ইফতার আসবে, কিন্তু ঝাঁপ খুলবে না কলকাতার রোজার ফুড স্ট্রিটের। নাখোদা মসজিদের প্রধান। মোতয়ালী হাজি নূর মোহাম্মদ জাকারিয়ার নামাঙ্কিত জন্নত ই জাকারিয়া রমজান মাসে জনশূন্য হচ্ছে শনিবার থেকে।
নাখোদা মসজিদের সামনে ১৯০৬ সালে হামিজ আব্দুল মাজিদের ইউনানি ফর্মুলায় বানানো রূহ আফজার বোতলে চুমুক দেয়ার পর গুটিকয়েক খেজুর মুখে দিয়ে সুগন্ধী সরবতের চনমনে শরীরে ফুড স্ট্রিট প্রদক্ষিণের দিন শনিবার থেকে শেষ। শার মল কিংবা বাখরখানি রুটির সঙ্গে মনমাতানো কাবাবের স্বাদ নেয়ার স্বপ্ন শেষ শনিবারের বারবেলায়। কে আর শুনবে বাখর খান নামের এক ক্রীতদাস, পরে যিনি চট্টগ্রামের জায়গীরদার হন, তার সঙ্গে খানি বেগম নামে এক নর্তকীর প্ৰেম কাহিনি। সেখান থেকেই বাখরখানি।
কত রকমের কাবাব এর দোকান জাকারিয়া স্ট্রিটে। শিক কাবাব, দহি কাবাব, মালাই কাবাব, রেশমি কাবাব, শমী কাবাব, হান্ডি কাবাব, কলিজা কাবাব। আরও কত কি। শনিবার থেকে কাবাবের চুলা জ্বলবে না। মিলবে না চিকেন আফগানি কিংবা জাকারিয়া স্ট্রিট এর ইফতারের বৈশিষ্ট্য চিকেন চেঙ্গিজ। সরবত, মিঠাই এর দোকান বন্ধ। মিলবে না ডাল আর মাংস দিয়ে বানানো দুর্দান্ত হালিম। রমজানের সময় আতর বিকোয় জাকারিয়া স্ট্রিটে নানা দামে। হাজার টাকা শিশি আতরের সঙ্গে আছে কুড়ি টাকা শিশির আতর। শনিবার থেকে আতরের গন্ধে আর ম ম করবেনা জাকারিয়া স্ট্রিট। অদম্য কোভিড শুষে নিল জন্নত ই জাকারিয়ার প্রাণ। তাই, শনিবার জাকারিয়া স্ট্রিট কাঁদছে। এই কান্নার বোল শুনতে পাওয়া যায়না। হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়।