দু’সন্তানের মা অ্যাইনে লিঞ্চ (৩৫) অনুকরণ করে ডিম রান্না করতে গিয়ে তা বিস্ফোরিত হয়ে দগ্ধ হয়েছেন । তিনি ‘লুজ ওমেন’ অনুষ্ঠানের প্যানেলিস্ট ফ্রাঙ্কি ব্রিজের দেখানো পদ্ধতি অনুকরণ করে মাইক্রোওভেনে ডিম রান্না করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ডিম বিস্ফোরিত হয়ে তার বুক, গলা, কাঁধ ও মুখ ঝলসে গেছে।
মারাত্মক এক অসুস্থতায় ভুগতে হচ্ছে তাকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মিরর। এতে বলা হয়েছে অ্যাইনে লিঞ্চ, তার স্বামী জনি ও দু’সন্তানের বসবাস আয়ারল্যান্ডে। কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে মিরর লিখেছে, সাবেক ‘স্যাটারডে’ গায়িকা ফ্রাঙ্কি ব্রিজের দেখানো ডিম রান্নার কৌশল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন অ্যাইনে লিঞ্চ। ফ্রাঙ্কি ব্রিজ একটি মগের অর্ধেকটা পানি নিয়ে তার ওপর ডিম ভেঙে সেটা মাইক্রোওয়েভেনে রান্না করেছিলেন।
তিনি অনুষ্ঠানের মঞ্চেই এভাবে যথাযথভাবে ডিম পোচ করা দেখিয়েছিলেন। এতে উদ্বুদ্ধ হন ভোডাফোনের ক্লায়েন্ট এক্সিকিউটিভ অ্যাইনে। তিনি নিজে নিজে একদিন সকালের নাস্তা বানাতে গিয়ে এর অনুকরণ করেন। তিনি বলেন, সেটা ছিল এক শনিবারের সকাল।
আমার স্বামী জনি এবং আমি দু’জনেই ঘুম থেকে উঠলাম। সন্তানদের সকালের নাস্তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। সকাল সাড়ে ১০টায় নাস্তা বানানো শুরু করি। এদিন ‘লুজ ওমেন’ অনুষ্ঠানে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী ডিম পোচ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সঙ্গে দেবো জারিত শুকনো মাংস। এ জন্য একটি মগের অর্ধেকটা পানি নিলাম, তা নাড়ালাম। একটি ডিম ভেঙে তার ভিতর দিয়ে দিলাম। এরপর সেটা ৬০ সেকেন্ডের জন্য মাইক্রোওভেনে বসিয়ে দিলাম। প্রথম ডিমটি বেশ ভালভাবেই তৈরি হলো।
আমি একই পদ্ধতিতে আরেকটি ডিম দিলাম। এবার সময় বেঁধে দিলাম ৫০ সেকেন্ড। এটা হয়ে গেলে মাইক্রোওভেন থেকে মগটি বের করে আনলাম। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ডিমটি বিস্ফোরিত হলো। এতে ফুটন্ত পানি ও ডিম আমার মুখে, বুকে, কাঁধে, গলায় ছিটকে এসে লাগলো। আমি চিৎকার করতে লাগলাম জনির নাম ধরে। দৌড়ে গেলাম বাথরুমে। মুখ ঠাণ্ডা পানিতে ভিজালাম। এরপর দুটি পশমী কাপড় দিয়ে মুখ মুছলাম। ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলাম। আমার স্বামী জনি আমাকে স্থানীয় এক কেমিস্টের কাছে নিয়ে গেলেন। সেখানে পল নামে একজন ফার্মাসিস্ট আমাকে একটি ক্রিম এবং দগ্ধ স্থানে ব্যবহারের জন্য প্যাড দিলেন। ওই কেমিস্টের কাছে যেতে সময় লেগেছিল ১০ মিনিট। কিন্তু আমার কষ্টটা এতই বেশি হচ্ছিল যে, মনে হচ্ছিল কয়েক ঘন্টা সময় চলে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ভীষণ বিধিনিষেধ আছে। তাই আমার স্বামী জনিকে বাইরে রেখে আমাকে ভিতরে নিয়ে গেলেন নার্সরা। তারা আমার পোড়া স্থানে প্যাড লাগিয়ে দিলেন।
গায়ে একটি কম্পল জড়িয়ে দিলেন। তখনও আমি কষ্ট থেকে হিম শীতলতায় ঠান্ডায় কাঁপছি। তবে ভাগ্য ভালো যে, ঘটনার সময় আমার কোলো কোনো সন্তান ছিল না। সাধারণত রান্নার সময় বাচ্চাদের কোলে রাখি। ৫ ঘন্টা সেখানে অপেক্ষার পর আমাকে সেখান থেকে বেদনানাশক, লোশন এবং ড্রেসিং সামগ্রীসহ একটি ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হলো।
এ ঘটনার পর তিনি অন্যদেরকে এমন অনুকরণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।