আমরা আসলেই বোধবুদ্ধিহীন মাঝে-মধ্যেই মনে হয়। না হলে দুর্ঘটনা ঘটে। তদন্ত কমিটি হয়। প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সুপারিশ করা হয়। কিছুদিন অভিযান চলে। কাগজে গরম গরম কিছু রিপোর্ট আসে। অনেক ভুক্তভুগি জ্বালাময়ী ভাষায় কথা বলেন টেলিভিশনে।

প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা আর ছাড় নয় বলে হুঙ্কার করেন। তারপর যেই লাউ সেই কদু। অন্য কোন একটি ঘটনা এলে তা আবার পিছনে পড়ে যায়। ফের যা ঘটার তাই ঘটতে থাকে।
আজ ছুটির সকালের দুটি ঘটনা এমন কিছু প্রশ্নকে আবার সামনে নিয়ে এসেছে। একটি পুরোনো ঢাকার আরমানীটোলার রাসায়িনক কারখানায় দাহ্য পদার্থ থেকে সৃষ্ট আগুন। অন্যটি নারায়ণঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় ভবনের একটি ফ্লাটে গ্যাস লিকেজ থেকে সৃষ্ট বিস্ফোরণ। একটু পিছনে ফিরলে আমরা কি দেখতে পাই। আজ থেকে ঠিক এগারো বছর আগে পুরনো ঢাকার নিমতলীতে কি ঘটেছিল? রাসায়নিক কারখানা থেকে সৃষ্ট দাহ্য পদার্থে পুরো একটি এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সে ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো দেশ।
অসংখ্য পরিবার স্বজন হারিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সেই সকল স্বজন হারানো পরিবারের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঠিক এর পরপরই প্রকাশিত পত্রিকার ফাইল দেখলেই বোঝা যাবে পুরোনো ঢাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা সরাতে কত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কত ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে। আসলে সবই কি ছিল লোক দেখানো। বলা হয়ে থাকে, মানুষের শোকের আয়ু বড় জোড় একমাস। আর এখন তো ফেসবুকের যুগে তা ঠেকেছে স্ট্যাটাস পর্যন্তই।

ynএই কিছুদিন আগেই নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকায় একটি মসজিদে গ্যাস লিকেজে সৃষ্ট বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তিতাস কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। লোক দেখানো কিছূ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। কিন্তু কি দেখলাম আমরা? আবারও একইরকম দুর্ঘটনা। তিনমাসের শিশুসহ দুই পরিবারের ১১জন দগ্ধ হয়েছে। তারা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে হাসপাতালে।
একের পর এক দুর্ঘটনা আর মৃত্যু এই কি তাহলে সমাধান? অসাবধানতা অথবা ইচ্ছাকৃত কার্যক্রমের ফলে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা একটু সাবধানতা বা সচেতন হলেই দূর করা সম্ভব। এইসব ঘটনা বন্ধে কবে যে কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে, উপরঅলাই মালুম।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031