গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর অভিজাত মার্কেটগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক কম। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে গণপরিবহনের পর শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তা পুরোপুরি মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। মার্কেটে মাস্ক পরাসহ নির্দিষ্ট দূরত্বে চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও বেশিরভাগ মার্কেটে মানা হচ্ছে না। তবে দুপুরের পর ক্রেতাদের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। অধিকাংশ মার্কেটের প্রবেশমুখে রাখা হয়নি হ্যান্ডস্যানিটাইজার কিংবা স্যাভলন মিশ্রিত পানি। মার্কেটের প্রবেশের সময় দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতা ও দর্শনার্থী প্রবেশ করলেও ভিতরে সম্পূর্ণ উল্টো। অধিকাংশ বিক্রেতা ও ক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
অনেকের থুতনিতে ঝুলছে মাস্ক। কারো আবার নেই। দুপুরে বসুন্ধরা সিটিতে দেখা যায়, প্রবেশমুখে স্বাস্থ্যবিধির কড়া পাহারা। প্রতিটি গেটে রয়েছে জীবাণুনাশক টানেল। সেখানে ঢুকলেই পুরো শরীরে স্যাভলন মিশ্রিত পানি ছিটানো হচ্ছে। এ ছাড়া নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আগন্তুকদের হাতে তা ছিটানো হচ্ছে। ভিতরের অংশে কেউ কেউ মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন। ছবি তুলছেন। কেউ কেউ আড্ডা দিচ্ছেন।
ক্রেতাদের মতো অনেক দোকানির মুখে নেই মাস্ক। নিরাপত্তাকর্মীরা হ্যান্ড মাইক নিয়ে ঘুরে ঘুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিচ্ছেন। আবার অনেককেই সতর্ক করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তাকর্মীরা চলে গেলে ফের আগের মতো মাস্ক খুলে বেচাবিক্রি করছেন দোকানিরা। একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, আমারা নিয়মিত সাবধানতা অবলম্বন করছি।
স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকে প্রচার করছি। নিয়মিত প্রতিটি লেভেলে অভিযান চালাচ্ছি। তবুও অনেক ক্রেতা বিক্রেতা সচেতন হচ্ছেন না। তবে অন্যান্য শপিংমলের তুলনায় এখানকার অবস্থা অনেক ভালো। গাউছিয়া মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মানা হচ্ছে না কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। কিছুসংখ্যক ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের মুখে তাও নেই। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অনেক দিন পর মার্কেট খোলায় ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। এতে অনেক গরম লাগছে। মাস্ক পরে বেচাবিক্রি করতে সমস্যা হয়। দরদাম করা যায় না। একই অবস্থা রাজধানীর নিউ মার্কেটে। মার্কেটের প্রবেশমুখে নেই কোনো ধরনের জীবাণুনাশক টানেল। দোকানিদের মধ্যে নেই কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। এর মধ্যে গত কয়েকদিন দোকান খুলতে পারিনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা রাখলেও ক্রেতারা আসছেন না। এতে আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি যতটুকু সম্ভব আমরা মেনে চলার চেষ্টা করছি।