দেশের দুই পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে বলে গুজবের মধ্যে শেয়ার বিক্রির চাপে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। রোববার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১.৫৬ শতাংশ বা প্রায় ৮৫ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৫৩৪৯ পয়েন্টে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১.৬৭ শতাংশ বা প্রায় ২৬৩ পয়েন্ট। এতে সিএএসপিআই দাঁড়িয়েছে ১৫৪৮৬ পয়েন্টে। এর আগে বৃহস্পতিবারও দুই পুঁজিবাজারে বড় পতন হয়। ওইদিন ঢাকার পুঁজিবাজারের ডিএসইএক্স সূচক ১.৪৮ শতাংশ বা ৮১ পয়েন্ট দাঁড়ায় ৫৪৩৪ পয়েন্টে। একই সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে ডিএসই।
এদিকে এই দুই দিনের বড় দরপতনের কারণ খতিয়ে দেখতে ও করণীয় কী, তা জানতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বিএমবিএ নেতাদের বৈঠকে ডেকেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শেষে ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮৪ পয়েন্ট। গত কার্যদিবস কমেছিল ৮১ পয়েন্ট। অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬৪ পয়েন্ট। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে ২৪২টির, বেড়েছে ৩১টির এবং দর বদলায়নি ৭৮টির। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকার।
গত কার্যদিবস লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। অপরদিকে সিএসইতে হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে ১৬৬টির, বেড়েছে ১৭টির, অপরিবর্তিত আছে ৪৮টির দর। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজারে একটা গুজব ছিল যে, মহামারির প্রকোপ বাড়ায় আবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে হবে, যাতে পুঁজিবাজারসহ সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে। এই গুজবে বিনিয়োগকারীরা ভয় পেয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছিল। এই কারণেই বাজার পড়ে গেছে। এর আগে করোনা মহামারির বিস্তার রোধে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে গত বছরের ২৬শে মার্চ থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত বন্ধ ছিল পুঁজিবাজার। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়লে পুঁজিবাজার বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, সেরকম কিছু হবে না। ব্যাংক খোলা থাকলে, পুঁজিবাজারও খোলা থাকবে।