রাজধানীতে মশার প্রকোপ বেড়েই চলেছে গত কয়েক মাসে । ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন চতুর্থ প্রজন্মের লার্ভিসাইড কীটনাশক ‘নোভালোরন’ প্রয়োগ করেও মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়নি। কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের অনেক গাফিলতি রয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মশককর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা। যেসব স্থানে মশার বংশবিস্তার হয় সেসব স্থানে তারা কীটনাশক প্রয়োগ করছেন না।
জানা যায়, রাজধানীতে শীতের মৌসুম থেকে কিউলেক্স মশার বিস্তার বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। মশা পচা পানি ও বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে প্রজনন করে থাকে।

মশককর্মীরা সেসব স্থানে কীটনাশক ছিটাতে পারেন না। ফলে মশা লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এরই মধ্যে বিকল্প পন্থা হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এবার মশককর্র্মীদের পাশাপাশি কীটনাশক ছিটাবে ড্রোন। ডিএনসিসি’র বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, জলাশয় থেকে মশার বিস্তার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেসব জলাশয়ে সনাতন পদ্ধতিতে ওষুধ ছিটানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব জায়গায় ড্রোনের সাহায্যে কীটনাশক ছিটানো হবে। দেশীয় তৈরি ড্রোনের সাহায্যে প্রতি মিনিটে ৫ লিটার ওষুধ ছিটাতে সক্ষম হবে। এই উদ্যোগ সফল হলে অল্প সময়ে মশা নিধন করা সম্ভব হবে। এতে ডিএনসিসি’র জনবল ও আর্থিক খরচ হ্রাস পাবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার  বলেন, বড় ডোবা ও জলাশয়ে মশককর্মীরা ওষুধ ছিটাতে পারছেন না। এক্ষেত্রে ড্রোনের সাহায্যে সব জায়গায় ওষুধ প্রয়োগ হলে সিটি করপোরেশন সুফল পাবে। তবে  ড্রোন সিস্টেম কতোদিন চলমান থাকে সেটি দেখার বিষয়। ডোবা ও জলাশয়ের মশার বিস্তার নিধন করতে হলে এটিকে অব্যাহত রাখতে হবে। তবে ড্রোনের সাহায্যে কীটনাশক শুধু জলাশয়ই ব্যবহার করা উচিত। লোকালয়ে এটি ব্যবহার হলে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়েদুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোনের ব্যবহার শুরু করেছি। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানী লেকে এর সাহায্যে ওষুধ স্প্রে করেছি। গত কয়েকদিনে বনানী লেকের আশপাশ এলাকায় ফলোআপ করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এই সিস্টেমটি কাজে আসছে। এখন আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। শিগগিরই যেসব স্থানে মশককর্মীরা ওষুধ ছিটাতে পারছেন না সেসব স্থানে ড্রোন কাজ করবে।
তিনি আরো বলেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশন গত ২০ থেকে ২৮শে ফেব্রুয়ারি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই সময়ে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়েছে। আগামী ৮ থেকে ১৬ই মার্চ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় আবারো বিশেষ মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031