৩৬ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু অনলাইনে বন্ধুদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে । পরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও আত্মীয়ের দ্বারা ২৭ শতাংশ এবং অপরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দ্বারা ১৮ শতাংশের বেশি মেয়ে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘অনলাইনে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও আইনি পর্যালোচনা’ ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় এতথ্য জানায় বেসরকারি সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

সংস্থাটি ঢাকা ও সাতক্ষীরায় ১৭৮ শিশুর ওপর জরিপ করে এতথ্য প্রকাশ করে। আসকের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮২ জন ছেলে ও ৯৬ জন মেয়েশিশুর উপর জরিপ করা হয়। এতে ৮ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু অনলাইনে যৌন শোষণ, হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। প্রায় ৮ শতাংশ শিশু সাইবার বুলিং ও যৌন আবেদনমূলক কনটেন্টের মুখোমুখি হয়েছে । ২৩ শতাংশ মেয়েশিশু যৌন কনটেন্টের মুখোমুখি হয়েছে।

৪৬ শতাংশ অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব পেয়েছে। এতে আরো বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া ৬৪ শতাংশের বেশি শিশুদের নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে। বাকিরা মা বা বাবার ফোন ব্যবহার করে। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী শতকরা ৬৩ শতাংশ ছেলেশিশু মেয়েশিশুদের তুলনায় নিজেদের বেডরুমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পায়।

সভায় আসক জানায়, ২০১১ সালে অনলাইনে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল ৩৫ জন শিশু। ২০২০ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ জনে। ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩৯৯ শিশু অনলাইনে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে ২০০৮ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ৮ লাখ। এখন ১১ কোটিতে পৌঁছেছে। সরকার ৩০ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ করেছে। ইন্টারনেটে পর্নো সাইট অনুসন্ধানে বাংলাদেশ শীর্ষ দশে ছিল। এখন বাংলাদেশের অবস্থান ১০০এর নিচে রয়েছে। নতুন প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব পালনের জন্য সবাইকে ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে, দক্ষতা গড়ে তুলতে হবে।

আসকের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামালের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় আইন কমিশনের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (শিশু অধিকার আইনবিষয়ক ফোকাল পারসন) ফারজানা হোসাইন, ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাসুদ আলী, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের পরিচালক (কর্মসূচি) নাসিমা আক্তার জলি, লালমাটিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি ইউনিটের জেন্ডার বিশেষজ্ঞ নবকুমার দত্ত।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031