ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সদ্যঘোষিত কমিটিতে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের রেখে দলটি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধমির্নী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এই গ্রন্থটি প্রকাশ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে তাদের গঠনতন্ত্র দেখা উচিত- এতে কতজন আছে এবং কিভাবে কমিটি গঠন হবে, তা দেখা উচিত।’
কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কী ধরনের রাজনৈতিক দল, তাদের কি কোন নীতি বা নিয়মতান্ত্রিকতা নেই। দেখা যাচ্ছে যে- এই কমিটি স্বার্থান্বেষী মহলের কমিটি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা জাতিকে কী-বা দিতে পারে।’
জেনারেল জিয়াই দেশে প্রথম যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়ে পুনর্বাসিত করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার পরিবারও একই কাজ করে যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধ্বংস করেন। তিনিই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে রুদ্ধ করে খুনিদের বিদেশে মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন।’
২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজও কেউ বিচার চাইতে আসলে এই প্রশ্ন জাগে, আমাকে আমার বাবা-মা, ভাইদের হত্যাকারীদের বিচারের জন্য ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
বিএনপি’র কোন গঠনতন্ত্র, লক্ষ্য এবং নীতি নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের একমাত্র লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় গিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি এবং এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করা।’
বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই মহীয়সী নারী বঙ্গবন্ধুকে জাতির গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রেরণা যোগাতেন।
তিনি বলেন, ‘৬-দফা আন্দোলন এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সকল লড়াই-সংগ্রামে বঙ্গমাতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে কোনো সময়ই কোনো বিষয়ে সমস্যায় পড়তে হয়নি, কারণ বঙ্গমাতা সবসময়ই তাঁকে পাশে থেকে সহযোগিতা করতেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতাই বোধহয় সবচেয়ে আগে জানতেন এই বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে। তাঁর এই বিশ্বাসের দৃঢ়তার কারণেই বাংলার স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ওপর বই প্রকাশ করায় আওয়ামী যুবলীগকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন- যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ।