রাজধানীবাসী প্রায় এক বছর ভয় আর শংকা নিয়ে অনেকটাই ঘর বন্দি থাকার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে আসার মধ্যে মহামারির শোক ছাপিয়ে বসন্ত উৎসব করেছে । বিশেষ করে তারুণ্য মেতেছিল বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে। কারও মুখে ছিল মাস্ক, আরও মুখে নেই। তবে আবরণে আভরণে বেশভূষায় ছিল বাসন্তি সাজ।
ফাল্গুনের প্রথম দিনে মানুষের মনের সঙ্গে বৃক্ষরাজিতেও ছিল যেন বসন্তের আবহ। ঋতুরাজের আগমনের আগে থেকেই ফুটতে ছিল শিমুল-পলাশেসহ নানা রঙের ফুল। শীত কমে এসে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে বয়ে যাচ্ছে মাতাল সমীরণও। এমন বসন্তদিনের অভিষেকে ঢাকাবাসীর আয়োজনেও কমতি ছিল না।
রবিবার ভোরে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হয় বসন্ত উৎসব। বাসন্তী রঙে রঙিন হয়ে তাতে সামিল হন নগরবাসী। হলুদ, কমলা, লাল, সবুজের বাহারি বসন, চুলে হলুদ গাঁদা কিংবা মাথায় ফুলের মুকুট, কপালে টিপ- এসবে নারীরা নিয়েছিল বসন্তের সাজ। পাঞ্জাবি কিংবা টি-শার্ট পুরুষের সাজেও লেগেছিল উজ্জ্বল রঙ।
মুক্তমঞ্চে বসন্ত বন্দনা শুরু হয় সকাল সাড়ে সাতটায় দীপেন সরকারের যন্ত্র বাদনের মাধ্যমে। এরপর একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী ভাস্কর বন্দোপাধ্যায় পংক্তিমালায় বসন্তের আবাহন করেন। এরপর একে একে দলীয় সংগীত আর নৃত্য পরিবেশন করে বিভিন্ন সঙ্গীত ও নৃত্য সংগঠন। সোহরাওয়ার্দীর মুক্তমঞ্চ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বসন্ত উৎসব।
আগের বছরগুলোতে ১৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত উৎসব পালিত হলেও এবার বাংলা একাডেমির সংশোধিত বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বসন্ত উৎসব পড়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর সঙ্গে আবার পাশ্চাত্য ঢংয়ের ভ্যালেন্টাইন ডে পড়ায় উঠতি বয়সীরাও মুখর ছিল বসন্ত-ভালোবাসায়।
এদিকে বিকাল চারটায় শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চে শুরু হয় বসন্ত উৎসবের আয়োজন। সেখানে আলোচনা পর্বে যোগ দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এখানে সঙ্গীত ও নৃত্যসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে বিভিন্ন সংগঠন।