আগামীকাল রবিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে দেশে স্থানীয় সরকারের ৫৫টি পৌরসভায়। চতুর্থ দফায় এদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বেলা ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
এই দফায় ২৫ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। বাকি পৌরসভায় ভোট হবে ব্যালটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে পৌরসভায় ভোট সুষ্ঠু করতে ইসির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এই দফায় ৫৬ পৌরসভায় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলেও অনিবার্য কারণে গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগের তিন দফায় দেশের ১৪৭টি পৌরসভায় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে ইসি। এর মধ্যে প্রথম দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর ২৪ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৬ জানুয়ারি ৬০ পৌরসভায় এবং তৃতীয় দফায় ৩০ জানুয়ারি আরও ৬৩ পৌরসভায় ভোট নেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারিতে ৩১ পৌরসভায় ভোটগ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা রয়েছে।
ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন
এদিকে ৫৫ পৌরসভায় সবধরনের প্রচার শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভোটের। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখন জয়-পরাজয়ের হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইনানুযায়ী, ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে সবধরনের প্রচার বন্ধ করতে হয়।
এদিকে প্রচার শেষ হওয়ার পাশাপাশি ভোট গ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে নির্বাচনী এলাকায় যানচলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী শুক্রবার রাত থেকেই ৫৪ ঘণ্টার জন্য মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া অন্যান্য যন্ত্রচালিত যান ১৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত ১২টা থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে না। জাতীয় মহাসড়ককে যান চলাচল করবে।
একইসঙ্গে জরুরি পণ্য পরিবহন ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে সাংবাদিক, নির্বাচনী কর্মকর্তা, প্রার্থী, প্রার্থীর এজেন্টেদের গাড়ি।
‘ইসির লক্ষ্য অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচন’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। এজন্য যা যা করা দরকার তার সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
হুমায়ুন কবীর জানান, রবিবার ৩৪টি জেলায় ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে অনিয়ম রোধে প্রতি কেন্দ্রে তিন থেকে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ থাকবে। অঙ্গীভূত আনসারসহ সব মিলিয়ে প্রতি কেন্দ্রে ১১ থেকে ১৩ জন সদস্য থাকবেন। এর বাইরে আমাদের প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে র্যাবের টিম থাকবে, পুলিশের টিম থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
তিনি জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার চাহিদার ভিত্তিতে ২৭টি স্থানে র্যাব ও বিজিবি টিম বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ফ্রি, ফেয়ার এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হবে। আমরা আশা করছি এটি ক্রেডিবল হবে।’
সচিব বলেন, ল’ অ্যান্ড অর্ডারসহ ভোটের সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ আমরা বৈঠক করেছি। ইসির বিশেষ নির্দেশনা যেটি রয়েছে, তা হলো ল’ অ্যান্ড অর্ডার যেন ঠিক থাকে। জেলা প্রশাসক, এসপি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে নির্বাচনটা যেন ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়।
যে ৫৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ রবিবার
যেসব পৌরসভায় রবিবার ভোট হবে সেগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও সদর ও রাণীশংকৈল; রাজশাহীর নওহাটা, গোদাগাড়ী ও তাহেরপুর; লালমনিরহাট সদর ও পাটগ্রাম, নরসিংদী সদর ও মাধবদী, রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ, বরিশালের মুলাদী ও বানারীপাড়া, শেরপুর সদর ও শীবরদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, নাটোর সদর ও বড়াইগ্রাম, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, বান্দরবান সদর, বাগেরহাট সদর, সাতক্ষীরা সদর।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও পটিয়া, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, হোসেনপুর ও করিমগঞ্জ, টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও কালিহাতী, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও আলমডাঙ্গা, ফেনীর পরশুরাম, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ, নেত্রকোনা সদর, যশোরের চৌগাছা ও বাঘারপাড়া, রাঙ্গামাটি সদর, মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম।
শরীয়তপুরের ডামুড্যা, জামালপুরের মেলান্দহ, ময়মনসিংহের ফুলপুর, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও কালাই, নোয়াখালীর চাটখিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, ফরিদপুরের নগরকান্দা এবং সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভায়।