প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নিবন্ধন সহজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর করোনার ভ্যাকসিনের জন্য বয়সের যে সীমা ছিল তা কমিয়ে ৫৫ বছর থেকে ৪০ বছর করা হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সারসংক্ষেপ সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধনের বয়সসীমা শিথিল করা হলো। ৪০ বছর বয়স হলেই করোনার ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করা যাবে। এখন পর্যায়ক্রমে অন্য বয়সীদের জন্যও নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো নির্দেশনা দিয়েছেন, ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী কেউ যদি আগাম নিবন্ধন করতে না পারেন, তবে তিনি তার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট টিকাদান কেন্দ্রে গেলে সেখান থেকেই যেন সরাসরি নিবন্ধন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবে সে জন্য নিবন্ধন করতে না পারার সুনির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে। ভ্যাকসিন নিলেও প্রধানমন্ত্রী সবাইকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যাদের সুযোগ রয়েছে সবাই যেন করোনার টিকা নেন, আমরা এ জিনিসটাকে ব্যাপকহারে প্রমোট করছি। আমরা মনে করি টিকার কার্যকারিতা ৭০ ভাগ। তার মানে ১০০ জন লোকের মধ্যে ৭০ জন টিকা নেয়ার ফলে তারা সুস্থ থাকেন, তাহলে ভাইরাসকে হ্যান্ডেল (মোকাবিলা) করতে আমাদের জন্য খুব সুবিধা হয়। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যাদের সুযোগ রয়েছে সবাই যেন করোনার টিকা নেন, আমরা এ জিনিসটাকে ব্যাপকহারে প্রমোট করছি। আমরা মনে করি টিকার কার্যকারিতা ৭০ ভাগ। তার মানে ১০০ জন লোকের মধ্যে ৭০ জন টিকা নেয়ার ফলে তারা সুস্থ থাকেন, তাহলে ভাইরাসকে হ্যান্ডেল (মোকাবিলা) করতে আমাদের জন্য খুব সুবিধা হয়। এ ছাড়া মন্ত্রিসভায় আরো কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলো যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য নতুন একটি আইন হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এই আইন পাস হলে দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করতে হলে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন ও সনদ নিতে হবে। কোনো অব্যবস্থাপনা হলে বা শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদাণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। ব্রিফিংয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ আইন প্রবর্তন হলে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যববস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণির কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি আইনের অধীন নিবন্ধন সনদ নিয়ে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র খুলতে চাইলে কীভাবে তা করতে হবে খসড়ায় তা বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকার মহাবিপন্ন শকুন রক্ষায় গবাদিপশুর ব্যথানাশক কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের উৎপাদন বন্ধে সায় দিয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, আমাদের দেশে খুবই ডেঞ্জারসলি শকুনের সংখ্যা কমে গেছে, খুবই বিপজ্জনক অবস্থায়। সত্তরের দিকে দেশে ৫০ হাজারের মতো শকুন ছিল, এখন তাদের (মন্ত্রণালয়) হিসেবে মাত্র ২৬০টি আছে। তাও ক্রিটিক্যালি অবস্থায় আছে। এটার অন্যতম কারণ হলো কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ইউজ করার কারণে, এই ওষুধটা শকুনের মধ্যে গেলে মারা যায়। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ফার্মাসিটিক্যালস, ড্রাগ কোম্পানি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় আনে। সেখানে বলা হয়, কিটোপ্রোফেন বন্ধ না হলে শকুন এদেশে বাঁচবে না। কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ বন্ধ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় মেলোক্সিক্যাম নামে একটি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।